ভিডিও মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

সিরাজগঞ্জে নবজাতক চুরি ঘটনায় মানবপাচার মামলায় নারীর ১৪ বছরের কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জে নবজাতক চুরি ঘটনায় মানবপাচার মামলায় নারীর ১৪ বছরের কারাদণ্ড

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে নবজাতক চুরির ঘটনায় দায়ের করা মানবপাচার মামলায় এক নারীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় আরও পাঁচ আসামিকে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ রায় প্রদান করেন।

এ মামলার এজাহারে বাদি মো. মাজেদ আলী উল্লেখ করেন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রাতে তার স্ত্রী মোছা. সবিতা খাতুনকে (৩০) সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতাল হাটিকুমরুলে ভর্তি করেন। পরদিন সকালে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্ম হয়।

ঐদিন বিকেলে এক অজ্ঞাত নারী বোরখা পরে হাসপাতালে প্রবেশ করে নবজাতককে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশ ও সলঙ্গা থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে, ওই নারী নবজাতকসহ আলোকদিয়া গ্রামের দিকে গেছে বলে জানাতে পারে।

পুলিশ আলোকদিয়া গ্রামের ছায়রন বেওয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করে। একই স্থান থেকে মৃত অবস্থায় আরও একটি নবজাতক উদ্ধার করা হয়, যা ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হয়েছিল বলে পরবর্তীতে শনাক্ত হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর তারা শিশু চুরির ঘটনা স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলা দায়ের করা হয়।

আরও পড়ুন

আদালতের পর্যবেক্ষণ রায়ে বিচারক বেগম সালমা খাতুন বলেন, মানবিকতার পরিপন্থী এ ধরনের অপরাধ সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করে। শিশু চুরি ও পাচার একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি। আদালত এ ধরনের অপরাধে শূন্য সহনশীলতা অবলম্বন করবে। তিনি আরও বলেন, আসামি আলপনা খাতুনের বিরুদ্ধে উপস্থাপিত সাক্ষ্য, আলামত ও তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

একইসাথে আদালত জরিমানার অর্থ ভিকটিমের পরিবারকে প্রদান করতে আদেশ দেন। আসামির বর্তমান বা ভবিষ্যতের সম্পদ থেকেও এ অর্থ আদায়যোগ্য হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও মামলার অপর আসামি মোছা. ছায়রন বেওয়া, মোছা. মিনা খাতুন, মোছা. মায়া খাতুন, মো. রবিউল ইসলাম সকলেই আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। আদালত ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস প্রদান করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ সিরাজগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করেছেন। একটি শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যা মামলার প্রমাণকে আরও দৃঢ় করেছে। আদালতের এই রায় মানবপাচার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জে নবজাতক চুরি ঘটনায় মানবপাচার মামলায় নারীর ১৪ বছরের কারাদণ্ড

ঢাবিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধানে ডাকসুর সহযোগিতায় ৬ টাওয়ার স্থাপন

পুলিশের ৮০ কর্মকর্তার পদোন্নতি

চুয়াডাঙ্গায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে একই পরিবারের পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম

নারকেল বরফি রেসিপি

বগুড়ার শেরপুরে ট্রাক-ট্রলি সংঘর্ষে চালকের মৃত্যু