ভিডিও রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

স্বর্ণের দাম বাড়ায় ক্রেতাশূন্য দোকান পেশা বদলাচ্ছে স্বর্ণের কারিগররা

স্বর্ণের দাম বাড়ায় ক্রেতাশূন্য দোকান পেশা বদলাচ্ছে স্বর্ণের কারিগররা

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : সোনার দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বগুড়ার নন্দীগ্রামে জুয়েলারি দোকান গুলোতে দেখা দিয়েছে ক্রেতা সংকট। এতে চরম অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে পড়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালঙ্কার কারিগররা। এক সময় ব্যস্ত থাকা দোকানগুলো এখন প্রায় ফাঁকা পড়ে থাকে।

কাজ না থাকায় স্বর্ণশিল্পীরা দিন কাটাচ্ছেন দুশ্চিন্তায়, অনেকেই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন। গর্বের পেশা হিসেবে দেখা হতো যে স্বর্ণকারকে, আজ সেই পেশার মানুষগুলো ধুঁকছে টিকে থাকার লড়াইয়ে। নন্দীগ্রাম উপজেলা রোডের সোনার পট্টি ও বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্বর্ণের দোকানগুলোতে আগের মতো আর ক্রেতার ভিড় নেই। নতুন অলঙ্কার কেনার পরিবর্তে অনেকেই পুরনো গহনা মেরামত বা বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে কারিগড়দের আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় কাজের পরিমাণও কমে গেছে। অনেক কারিগড় এখন বেকার। উপার্জন না থাকায় কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। স্বর্ণ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এখন ২ লাখ ৯ হাজার ১০১ টাকা। এত দামে কে আর শখ পূরণ করবে? অর্ডার না থাকলে কারিগরদের কাজও থাকে না।

আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারিগর অনয় কুমার দৈনিক করতোয়া’কে বলেন, আগে মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হতো, এখন ১০ হাজার টাকাও হয় না। ভাবছি পান-সিগারেটের দোকান করব। আরেক কারিগর সুজন কুমার বলেন, যেভাবে  অবস্থা চলছে, সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। নকশার কারিগর উৎসব কুমার বলেন, আগে মাসে ৫-১০ ভরি স্বর্ণের কাজ করতাম, এখন এক ভরির কাজও মেলে না।

আরও পড়ুন

ক্রেতারাও জানাচ্ছেন হতাশার কথা। নারী ক্রেতা তানিয়া আক্তার বলেন, আগে নাকফুল কিনতাম ৪০০ টাকায়, এখন লাগছে ৩ হাজার টাকা। শখে বা প্রয়োজনেও আর কেনা সম্ভব নয়। স্বর্ণের দাম ক্রমবর্ধমান থাকায় বদলে যাচ্ছে স্বর্ণালঙ্কার উপহারের সংস্কৃতি। ক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ছোট্ট একটা আংটি ৪০ হাজার টাকার নিচে নেই। এত দামে উপহার না দিয়ে ২০-৩০ হাজার টাকা নগদ দিলেই সবাই খুশি।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নন্দীগ্রাম উপজেলা শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে প্রথম বারের মতো এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫০ হাজার টাকা ছাড়ায়। ২০২৩ সালে তা লাখ টাকা অতিক্রম করে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৫০ হাজারে, আর বর্তমানে তা ২ লাখ টাকারও বেশি।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নন্দীগ্রাম উপজেলা শাখার সভাপতি গৌতম চন্দ্র প্রামানিক দৈনিক করতোয়া’কে বলেন, নন্দীগ্রাম ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৭১টি দোকান রয়েছে, নন্দীগ্রাম পৌর শহরে ২৩ টি ও বিভিন্ন বাজারে রয়েছে ৪৮টি দোকান। কারিগর রয়েছে শতাধিক। বর্তমানে দোকানদার ও কারিগরদের চরম দুর্দিন চলছে। এভাবে চলতে থাকলে শুধু কারিগররাই নয়, দোকান মালিক ও মহাজনরাও একসময় দেউলিয়া হয়ে পড়বেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বর্ণের দাম বাড়ায় ক্রেতাশূন্য দোকান পেশা বদলাচ্ছে স্বর্ণের কারিগররা

চাঁদাবাজির অভিযোগে নভেম্বর থেকে গাড়ি বিক্রি বন্ধের হুঁশিয়ারি ব্যবসায়ীদের

উত্তরের জেলায় জেলায় তীব্র লোডশেডিং

লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণের দোকানে দুঃসাহসিক চুরি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ১ 

সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি