দিনাজপুরে আগাম জাতের আমন ধান বাজারে উঠতে শুরু

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : দিনাজপুরের হাট বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের আমন ধান। তবে কৃষকরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে আগাম ধান যে দামে তারা বিক্রি করছেন তাতে লাভের মুখ দেখছেন না। এতে অখুশি তারা। তারপরও দাম বেশির কথা বলছেন ক্রেতারা।
দিনাজপুর জেলার অন্যতম বৃহৎ ধানের হাট সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ। দিনাজপুর-দশমাইল সড়কের ধারে সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার বসে এই ধানের হাট। এই হাটে ভোর সাড়ে ৫টা থেকে কৃষকেরা বিভিন্ন যানবাহনে ধান নিয়ে হাটে আসতে শুরু করেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। এতে সকাল থেকেই ধান বেচাকেনা জমজমাট হয়ে ওঠে হাট-প্রাঙ্গণ।
গত সোমবার গোপালগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে আগাম জাতের আমন ধান উঠতে শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে বেচা-কেনা। হাটে আগাম জাতের প্রতিমণ বিনা-৭ আমন ধান, বিনা-১৭, বিনা-৭৫ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫ থেকে ১ হাজার ৭৫ টাকায়। প্রতিমণ কোটরাপাড়ি, পাথরভাটার দাম পড়েছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। পুরোনো বোরো সম্পা কাটারি ও বগুড়া কাটারির বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টাকা মন দরে।
কৃষকদের অভিযোগ, এই দামে ধান বিক্রি করে উঠছে না উৎপাদন খরচ। হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, সার, কীটনাশক ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক ব্যয়ে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। তার সাথে যোগ হচ্ছে শ্রমিক খরচ। সব মিলিয়ে খরচ মিটিয়ে ধান বিক্রি করে কোনো লাভই হচ্ছে না। উল্টো লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনএদিকে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কিনে সুবিধা করতে পারছেন না বলে দাবি ব্যবসায়ী ও মিলারদের। বাজারে ধানের ক্রেতারা বলছেন, ধান কিনে তারা মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। মিল মালিকরা যে দামে ধান কিনেন, সেখান থেকে সামান্য লাভ রেখেই তারা বাজারে ধান কিনেন। তাই বেশি দামে ধান কিনতে গেলে লোকসান গুনতে হবে তাদের।
অপরদিকে মিল মালিকরা বলছেন, ধান কিনে চাল তৈরি করে তাদের সামান্য লাভ করতে হয়। কিন্তু ভারতীয় চাল আমদানি হওয়ায় বিক্রি কমেছে, আশানুরূপ দামও পাচ্ছেন না। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য, দিনাজপুরে ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে এবার আমন আবাদ হয়েছে। চালের আকারে জেলায় এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ মেট্রিক টন।
মন্তব্য করুন