সুনামগঞ্জে বেড়িবাঁধ রক্ষায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান (চলতি) নদীর পাড়ে পেয়ারপুল ডালা নামক বেড়িবাঁধ রক্ষায় মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা।
আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ‘আমাদের নদী, আমাদের জীবন : সুস্থ ধারার সুরক্ষা, ক্ষতিগ্রস্ত নদীর পুনর্জাগরণ’ এই স্লোগানে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে এসো কাজ করি মহিলা উন্নয়ন সমিতি। আর এতে সহযোগিতায় করেছে এলআরডি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণেই ধোপাজান নদীর পাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে কৃষিজমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ১৫টি গ্রামজুড়ে আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের, আর ধোপাজানের তীরে প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে হাহাকারের শব্দ।
এসো কাজ করি সমিতির সভাপতি জাহানারা বেগমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রতারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুহসীন আহমদ ইয়াসিন, শিক্ষক হাবিবুর রহমান, আবদুল হালিম, আবুল মনসুর, বদরুল আলম, সোহাগ হোসেন, আব্দুল খালেক, কামাল উদ্দিন, রহমত আলী, সাজেদা বেগম, পারুল বেগম, এবং শিক্ষার্থী নাঈম ও আশরাফুল।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ধোপাজান নদীতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। এর ফলে সরকারি বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে এবং নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে আশপাশের বিশাল এলাকা। ইতোমধ্যে পুরান মথুরকান্দি, আদাং ও ডলুরা গ্রামের একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরান মথুরকান্দি, আদাং, ডলুরা ও সলুকাবাদ ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম, পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এলাকার একমাত্র উচ্চ বিদ্যাপীঠ রতারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
আরও পড়ুনঅধ্যক্ষ মো. মুহসীন আহমদ ইয়াসিন বলেন, ধোপাজান নদীর পেয়ারপুল ডালা নামক বেড়িবাঁধটি এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ১৫-১৬টি গ্রাম, ফসলি জমি, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এটা শুধু একটি বাঁধ নয় এটা আমাদের বেঁচে থাকার আশ্রয়, আমাদের প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। আমরা শিক্ষক সমাজ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে দেখছি, কীভাবে নদী ধীরে ধীরে গ্রামগুলো গিলে খাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসার পথে আতঙ্কে থাকে, কেউ কেউ ইতোমধ্যে বাড়িঘর হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে, কৃষি ও জীবিকা হারাবে হাজারো পরিবার। আমরা বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি, কিন্তু অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা দেখা যায়নি। এখনই যদি টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হয়, তাহলে এই ভাঙনের সঙ্গে হারিয়ে যাবে একটি প্রজন্মের স্বপ্ন।
এসো কাজ করি মহিলা উন্নয়ন সমিতি’র সভাপতি জাহানারা বেগম বলেন, পানির স্তর কম থাকলেও ভাঙন থামছে না। বর্ষায় পানি বাড়লে বাঁধ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য করুন