ময়মনসিংহে বেসরকারি হাসপাতালে তিনবার অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যু, ৪ লাখ টাকায় রফাদফা

ময়মনসিংহ নগরীর ব্রাহ্মপল্লী রোডস্থ বেসরকারি ভেনাস হাসপাতালে শান্তা (২০) নামে এক প্রসূতি নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে স্বজনদের আহাজারিতে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৪ লাখ টাকা রফাদফা করা হয়। তবে ইতোমধ্যে বিষয়টি থানা পুলিশে গড়িয়েছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
আজ রোববার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর বলাশপুর এলাকায় মৃত ওই প্রসূতি নারীর জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে এদিন ভোরে ভেনাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা ওই প্রসূতি নারীর অবস্থা শঙ্কটাপন্ন হলে তাকে তড়িঘড়ি করে কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (সিবিএমসি) পাঠানো হয়। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে জানিয়েছেন নিহত নারীর স্বজনরা।
নিহত নারী শান্তা (২০) নগরীর বলাশপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তাকীমের স্ত্রী।
নিহত নারীর স্বামী মো. মোস্তাকীম বলেন, শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ভেনাস হাসপাতালে আমার প্রসূতি স্ত্রীকে ভর্তি করি। এরপর রাত ৮টার দিকে আমার স্ত্রীর সিজার হলে তার খিচুনি শুরু হয়। এ সময় আমার স্ত্রীকে আবার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে পেটে রেখে দেওয়া একটি যন্ত্র বের করে চিকিৎসকরা। এভাবে তারা ৩ বার অপারেশন করে। এতে রোগীর অবস্থা শঙ্কটাপন্ন হয়ে গেলে সারারাত সে ব্যথায় ফটফট করে। এরপর ভোরে আমার স্ত্রীকে ভেনাস হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি বের করে কমিউনিটি বেইজ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (সিবিএমসি) পাঠালে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুনভুক্তভোগী স্বামী এ ঘটনার বিচার চেয়ে বলেন, এটি একটি সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। তারা আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
নিহত নারীর মামী মোছা. আফরোজা বলেন, আমাদের রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা বলেছিল, সব নরমাল পজিশনে আছে। কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ভেনাস হাসপাতালের ডাক্তাররা সিজার করে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটিয়েছে।
জানতে চাইলে ভেনাস হাসপাতালের পরিচালক মো. আজহার মাহমুদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না, তবে শুনেছি বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামাধান হয়েছে। এতে কত টাকা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন