ভিডিও শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

দেবীর বিদায়ে ভক্তদের মাঝে বিষাদের সুর

বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব। ছবি : শফিকুল ইসলাম শফিক

স্টাফ রিপোর্টার : দেবী দুর্গার বিদায়ে বিষাদ, সিঁদুর খেলার আনন্দ ও  প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সকালে বিহিত পূজা, পুস্পাঞ্জলি ও শান্তির জল ছিটানোর পর দেবী দুর্গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়। পাঁচদিনব্যাপি এই উৎসবের জন্য ভক্তদের আবার অপেক্ষা করতে হবে এক বছর। প্রতি বছরের মত উৎসব উপলক্ষ্যে বগুড়ার সবগুলো পূজামণ্ডপ ভাসছিল আনন্দ ও আলোর বন্যায়।

গত চার দিন আনন্দ উল্লাসের পর বিজয়া দশমীতে দেবীর বিদায়ের করুন সুর বেজে উঠে ভক্তদের মাঝে। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানালেও ভক্তদের অন্তরে আগামি বছরে তার পুনরাগমনের প্রত্যাশায় আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে করতোয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে একের পর এক শহরের ও শহরের আশেপাশের বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে ঘাটগুলোতে প্রতিমা নিয়ে আসেন ভক্তরা। শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। চলে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত।

এবছর মহালয়ার মধ্য দিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত রোববার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এ আয়োজন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে শেষবারের মত দেবীর আশির্বাদ কামনায় মন্দীরে মন্দীরে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের ভক্ত নিবিষ্ট মনে প্রার্থনা করেন।

প্রতিটি মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয়। দেবীর বিদায় বেলায় চলেছে ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, টানা মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি। সকালে দশমী পূজা আরম্ভ হয়। করা হয় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন। শাস্ত্রমতে এদিন দেবী দুর্গা মর্ত ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যান তার সন্তানদের সাথে নিয়ে।

এই পাঁচ দিন উৎসবকে ঘিরে বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মেতে উঠেছিল ভক্তরা। প্রতিবছরের মত এবারও বিসর্জনের আগে সকাল ১১ টার দিকে মণ্ডপে মণ্ডপে অুনষ্ঠিত হয় সিঁদুর খেলা, আনন্দ উল্লাস আর নাচগান। হিন্দু সধবা নারীরা দেবী প্রতিমায়  সিঁদুর পরিয়ে  নিজেরা একে অন্যকে মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরান।

আরও পড়ুন

মহা দশমীতে বিভিন্ন আচার ও পূজা অর্চনা শেষে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অপেক্ষা করে বিকেল থেকেই ট্রাক ও ভ্যান করে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনার তালে তালে বগুড়া শহরের বিভিন্ন মন্দির ও আশেপাশের এলাকা থেকে শোভাযাত্রা করে প্রতিমাগুলো করতোয়া নদীর তীরে আনা হয়।

এসময় ভক্তদের কারও চোখে দেখা যায় অশ্রু, কারও ঠোঁটে শোনা যায় দেবীর বন্দনা। মনে বিষাদের  ছায়া থাকলেও  ভক্তরা মাকে বিদায় জানাতে নদীর পাড়ে নিয়ে যান। শুরু হয় বিসর্জন। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য করতোয়া নদীর মালতিনগর এসপিঘাট, দত্তবাড়ির কদমতলী ঘাট, চেলোপাড়া, লালমাটির ঘাটসহ শহরের আরও কয়েকটি ঘাটে লাইন করে ভক্তরা দেবী বিসর্জন করেছেন।

বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলার ১২টি উপজেলায় ৬৮১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বগুড়া সদরেই ১১৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছরের মত এবছরও শহরের বেশকিছু পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয় আরতি, উলধ্বনি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শঙ্খধ্বনিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা।

এদিকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রশাসনের পক্ষথেকে সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি বগুড়ার ফায়ার সার্ভিস কর্মীদেরও তৎপরতা দেখা গেছে, যাতে দেবী বিসর্জনের সময় কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

জাতিসংঘ সভাপতির পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা ফিলিস্তিনের

আসন্ন নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় প্রত্যাশায় বিএনপি

মানবপাচারকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেল ৩৮ জন, আটক ২

জার্মান ঐক্য দিবসে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা

বগুড়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা দলের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত