হাওরের ট্যুরিজমে মাছের ক্ষতি হচ্ছে: ফরিদা আখতার

টাঙ্গুয়ার হাওরে নিয়ন্ত্রণহীন ট্যুরিজম মাছের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, যেখানে মাছ থাকবে, সেখানে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন’ কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ফরিদা আখতার বলেন, হাওরের অর্ধেক সময় থাকে পানি, আর বাকি সময়ে সেখানে কৃষি হয়। কৃষিকাজে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবও মাছের ওপর পড়ে। একসময় মুক্ত জলাশয়ে মাছের পরিমাণ ছিল ৬০ শতাংশ, এখন সেই চিত্র উল্টো হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মাছ বৈচিত্র্যময় হলেও মেঘনা ও পদ্মা নদীর পানি দূষণ এবং ডুবোচরের কারণে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। হালদার রুই ও কাতলাকে জিআই তালিকাভুক্ত করতে হলে আরও গবেষণা জরুরি। মাছেরও পরিবেশের মতো একটি ‘বিপন্ন তালিকা’ থাকা দরকার।
এ সময় তিনি মুক্ত জলাশয় ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধুমাত্র যারা মৎস্য ব্যবস্থাপনায় জড়িত, তারাই ইজারা পেতে পারেন।
আরও পড়ুনকর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু জাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, মাছের খাদ্যমূল্য কেন বেশি—এটি যথাযথভাবে এনবিআরের কাছে তুলে ধরতে হবে, যাতে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায়। একইসঙ্গে নতুন জাত উদ্ভাবন এবং নদ-নদীর পানি দূষণরোধে বিজ্ঞানীদের আরও কার্যকর গবেষণা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী বলেন, গবেষণার মাধ্যমে মৎস্য খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে হবে, তবেই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ বাড়বে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র বলেন, কর্মশালায় ৪৯টি গবেষণা পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মাছের রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন বলেও তিনি জানান।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফসহ বিএফআরআই-এর বিজ্ঞানী, মৎস্য খামারি ও কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন