ভিডিও শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত

তেঁতুলিয়ায় নীল আকাশের নিচে ডানা মেলতে শুরু করেছে অপরূপা কাঞ্চনজঙ্ঘা

তেঁতুলিয়ায় নীল আকাশের নিচে ডানা মেলতে শুরু করেছে অপরূপা কাঞ্চনজঙ্ঘা। ছবি : দৈনিক করতোয়া

সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম, পঞ্চগড় : গত বুধবার সন্ধ্যায় ঝড়েছে এক পশলা বৃষ্টি। রাতে আকাশ গুড় গুড় করলেও মেঘ কেটে বৃহস্পতিবার সকালেই দেখা মেলে ঝলমলে রোদের। এরই মাঝে উত্তরের আকাশে ডানা মেলে ধরে মোহনীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে বেশিক্ষণ তার লাবণ্য ছড়াতে পারেনি। দুপুরের পর থেকে সফেদ মেঘে ঢাকা পড়তে শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘা। ওইদিন আর কাঞ্চনজঙ্ঘার মুখ দেখা যায়নি।

তবে মৌসুমের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখা গেছে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে। শরতের হালকা কুয়াশা ভেজা সকালে ভারতের কার্শিয়াং পাহাড়ি এলাকার ওপরে উত্তরাকাশে আবারও ডানা মেলে অপরূপা কাঞ্চনজঙ্ঘা। পঞ্চগড়ের মানুষের কোন আগ্রহ না থাকলেও সূর্যোদয়ের পরই টকটকে লাল আভায় স্বেতশুভ্র মায়াবি কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণে উল্লাস প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পঞ্চগড়ে আসা পর্যটকরা।

যারা তেঁতুলিয়ায় অবস্থান করছিলেন সকাল থেকে ঐতিহাসিক ডাকবাংলা থেকে সীমান্ত নদী মহানন্দার ওপর দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে হাজির হয়ে যান। মুঠোফোনের কল্যাণে খবর পেয়ে আশপাশের জেলা থেকে কিছু পর্যটকও হাজির হন তেঁতুলিয়ায়। তবে পর্যটকদের আশাহত করে দুপুরের পর থেকে। আগের দিনের মত সাদা মেঘে ঢেকে আড়ালে লুকিয়ে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা।

কোনটি কাঞ্চনজঙ্ঘা আর কোনটি মেঘ তা ঠাহরই করা যাচ্ছিল না। তবে উত্তরের আকাশে মেঘের ঘনঘটা কমে যাওয়ায় আবারও দৃশ্যমান হতে পারে মোহনীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। জেলার বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের আবহাওয়ার বিস্তারিত জেনে আসার অনুরোধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। যদিও কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। আবহাওয়া ভাল থাকলে আগামী মাস পর্যন্ত এমনকি শীতের সময়েও দেখা মিলতে পারে মায়াবি কাঞ্চনজঙ্ঘার।

কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় এবং হিমালয় পর্বতমালায় ২য় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা প্রায় সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ২৮ হাজার ১৬৯ ফুট বা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার। এটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের মধ্যে ভালোভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় পঞ্চগড় থেকে; বিশেষ করে তেঁতুলিয়ায়। তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের বেশ উঁচুতে ঐতিহাসিক ডাকবাংলো থেকে সীমান্ত নদী মহানন্দার ওপর দিয়ে দেখা যায় ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর পর্যটকদের কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনের প্রধান আকর্ষণ এই জায়গাটি। মহানন্দার ওপারেই ভারতের গ্রামাঞ্চলের অবস্থাও দেখা যায় এখান থেকেই।

তবে গত ২/৩ বছর থেকে পাশ্ববর্তি ঠাকুরগাঁও জেলাসহ আরও কয়েকটি জেলা থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলেছিল। পর্যটকদের আবাসন সুবিধার জন্য তেঁতুলিয়া গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল। কেউ কেউ আবার নিজের বাড়িতে আলাদা ঘর তুলে পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। গড়ে উঠেছে ইকো ট্যুরিজম। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উদ্যোগেও নির্মিত হয়েছে গেস্ট হাউস। তবে এসব গেস্ট হাউসে অফিসিয়াল ছাড়া অন্য কারো থাকার সুযোগ নেই।

এদিকে পর্যটকদের জন্য পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে আবাসিক হোটেলগুলো। কারণ শীত মৌসুম ছাড়া অন্য মৌসুমে এখানে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে অনেক কম। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা তেঁতুলিয়ায় এসে যেন কোন সমস্যার সম্মুখিন না হয় সেজন নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত ট্যুরিস্ট পুলিশ। তেঁতুলিয়া ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সদা প্রস্তুত রয়েছি। তেঁতুলিয়ার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি এমনিতেই ভার। তারপরও পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে আমাদের সদস্যরা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রোদের তীব্রতা শুধু শরীর নয়, পুড়িয়ে দিচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের জীবন ও জীবিকাও

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নদীতে নৌকা বাইচ একতা এক্সপ্রেস চ্যাম্পিয়ন

বাংলাদেশ সকল ধর্মের মানুষের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ - সচিব মো: সাইফুল্লাহ পান্না

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তুলির শেষ আঁচড় দিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

ফ্যাসিস্ট সরকার ১৭ বছর খুন গুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল : কাজী রফিকুল ইসলাম

দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু : নারকেলের নাড়ু না থাকলে যেন জমেই না পূজার ভোজ