গকসু নির্বাচন: উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে ভোটগ্রহণ

সাত বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে ভোট চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার গকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ হাজার ৭৬১ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। বিকেল ৩টার মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
এবারের নির্বাচনে সম্পাদকীয় পদ ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৮ জন প্রার্থী। সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়ছেন ৮ জন প্রার্থী। তারা হলেন: রাজিব হোসেন (ফলিত গণিত), আবু সুফিয়ান মুছা (ভেটেরিনারি), রাকিব (আইন), আব্দুল মাজেদ সালাফি (ভেটেরিনারি), রিফাত হোসাইন (আইন), নাসিম (রসায়ন), শেখ খোদারনূর ইসলাম (আইন), ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান (বাংলা)।সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে আছেন ৪ জন: রায়হান খান (ভেটেরিনারি), আফসানা মিমি (এমপিবিএমই), অন্তু দেওয়ান (আইন) ও রিদুয়ানুল ইসলাম মানিক (বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি)। অন্যান্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও প্রার্থীরা। সব মিলিয়ে একজন ভোটার ১২টি করে ভোট দিতে পারবেন। ভোটগ্রহণ হচ্ছে ওএমআর ফরমে, যা ম্যানুয়ালি গণনা করা হবে। ফলাফল ঘোষণা করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ভবনে, যেখানে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি ফল গণনার দৃশ্য দেখানো হবে।
সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছেন ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদে ৫২০ জন। এর পরের অবস্থানে ফার্মেসি বিভাগ, যেখানে ভোটার ৫১৮ জন। আইন বিভাগে ৪৮৪, ইংরেজি বিভাগে ৪২৬ ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে ৩৭৩ জন ভোটার আছেন। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভোটার ৩৫২, মাইক্রোবায়োলজিতে ৩৩৮, বাংলায় ২৮৯, সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্মে ২৭৫ এবং রাজনীতি ও প্রশাসনে ২৪৪ জন ভোটার রয়েছেন।এ ছাড়া রসায়নে ২১৪, ব্যবসায় প্রশাসনে ১৯৪, মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১৮২, ফলিত গণিতে ১২১ এবং কৃষি অনুষদে ১১৪ জন ভোটার রয়েছেন। ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভোটার সংখ্যা ৯৭ জন। সবচেয়ে কম ভোটার পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে, মাত্র ২১ জন।
গকসু নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ভোটকেন্দ্রসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। বহিরাগত প্রবেশ ঠেকাতে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ গেটে বিশেষ পাহারা বসানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরাও দায়িত্বে আছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকেরা বিশেষ কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারছেন।
আরও পড়ুনগকসু নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ফুয়াদ হোসেন জানান, ১৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন। এ ছাড়া ৩৮ জন শিক্ষক পোলিং অফিসার ও সমানসংখ্যক সহকারী পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে ৩০০ পুলিশ সদস্য। এর পাশাপাশি কাজ করছেন ডিজিএফআই, এনএসআই ও ডিবি কর্মকর্তারা। ক্যাম্পাসের বাইরে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে অবস্থান করছে। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন