কুড়িগ্রামের চিলমারীতে গৃহবধূ প্রতারণার শিকার, ৬ মাস ঘরছাড়া

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পরিষদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের কর্মচারী বেলাল শেখের বিরুদ্ধে ভাতা কার্ড করে দেওয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মচারী ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তার খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়ে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এক গৃহবধূ। ঘটনার ৬ মাস পার হলেও এখনও কোনো সুরাহা হয়নি, বরং প্রতারিত নারী সন্তানসহ অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী নারীর নাম মোছা. মনজিলা বেগম। তিনি চিলমারীর ডাওয়াইটারী এলাকার আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী। অভিযুক্ত মো. বেলাল শেখ নাটোরের শিংড়া উপজেলার চৌগাঁয়ের আব্দুল হামিদ শেখের ছেলে। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন (ইডিসি) প্রকল্পে ফিল্ড আইটি টেকনিশিয়ান হিসেবে ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের চিলমারী উপজেলা কার্যালয়ে যোগদান করেন। চলতি বছরের ২০ মার্চ থেকে তিনি অফিসে অনুপস্থিত এবং সাথে নিয়ে গেছেন অফিসের একটি ব্যবহৃত মোটরসাইকেল।
ভুক্তভোগী মনজিলা বেগম জানান, উপজেলা পরিষদে যাতায়াতের সুবাদে বেলাল শেখের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের কিছুদিন পর বেলাল তার আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে প্রথমে তার কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। এরপর এনজিও থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে দেন তাকে। সর্বশেষ বিভিন্ন ভাতা কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাসে আরও ৯০ হাজার টাকা নেন বেলাল। সব মিলিয়ে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বেলাল শেখ গা-ঢাকা দেন।
এ ঘটনায় মনজিলা বেগম আইনের আশ্রয় নিতে চাইছেন বলে জানিয়েছেন। তবে বেলাল শেখের বিরুদ্ধে এখনও থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিষয়ে থানাহাট ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোক্তার হোসেন বলেন, ঘটনাটি খুবই দু:খজনক।
আরও পড়ুনভুক্তভোগী নারী আমার ওয়ার্ডের ছোট কুষ্টারীর একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আমি কয়েকবার উপজেলা দপ্তরে গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ওই নারী এখন সামাজিক ও পারিবারিকভাবে চরম বিপদে আছেন।
এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের উপজেলা আইসিটি অফিসার ইঞ্জি: জ্যোতির্ময় দেবনাথ বলেন, ‘ভাতা কার্ড ইস্যু করা আমাদের দপ্তরের দায়িত্ব নয়। কেউ তাকে টাকা দিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। তবে এক নারী কয়েকবার অফিসে এসে বেলালের খোঁজ করেছেন। ইতোমধ্যে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মো. বেলাল শেখের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কোন নারী অভিযোগ দিতে আসেননি। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা অভিযোগ দিতে এসেছিলেন। অভিযোগটি এখনও নথিভুক্ত হয়নি। আইনি সহায়তা চাইলে সহায়তা করা হবে।
মন্তব্য করুন