বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মরণ’

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘জুলাই স্মরণ’ সভা । আজ ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার), ২০২৫, বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘জুলাই স্মরণ’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণঅভ্যুথানে শহীদ ও আহতদের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সভার শুরুতেই জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এরপর এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে গণঅভ্যুথানে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। বক্তব্যপর্বে, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইন বিভাগের শিক্ষক রাইহানুজ্জামান সোহান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন গণঅভ্যুথানে শহীদ বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাকিব আনজুমের শাহাদতের প্রতক্ষদর্শী আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শোভা সুলতানা। তিনি তার বক্তব্যে শহীদ সাকিব আনজুমের আত্মত্যাগ ও আন্দোলনে তাঁর অসামান্য ভূমিকা তুলে ধরেন।
জুলাই আন্দোলনে আহত বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জাহিদ হাসান পিয়ম ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। কীভাবে সাহস, সংহতি ও সংকল্প তাদের আন্দোলনে যুক্ত করেছিল। এরপর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নির্মিত “আওয়াজ উডা” গানের সঙ্গে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মুহূর্ত তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুনআইন বিভাগের শিক্ষার্থী আলী হাসের আল আমিন আন্দোলনকালীন সংবাদ সংগ্রহের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা শিক্ষক, আইন বিভাগের মোহাম্মদ শোয়াইব নাহিন, তাঁর স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্যে আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় তুলে ধরেন। ‘জুলাই স্মরণ’ সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে উপস্থিত সকলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। বক্তব্য রাখেন গণঅভ্যুথানে শহীদ রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী শহীদ রায়হান আলীর ছোট ভাই রানা ইসলাম। তিনি তার ভাই-এর জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের ঘটনা তুলে ধরেন। তাঁর স্মৃতিচারণে পুরো মিলনায়তনে এক গভীর আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ। আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মো. মাইনুল হক। তিনি সন্তানের স্বপ্ন, সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের স্মৃতি ভাগ করে নেন। তাঁর বক্তব্যে শোক, গর্ব ও ভালোবাসা একত্রে প্রকাশ পায়। অনুষ্ঠানের শেষাংশে বক্তব্য দেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা। তিনি বলেন, তাঁদের আত্মত্যাগ শুধু আমাদের গর্ব নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নৈতিক প্রেরণার উৎস। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সত্য, ন্যায় এবং মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে থাকবে।’ শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে 'জুলাই স্মরণ’ সভা'র পরিসমাপ্তি ঘটে ।
মন্তব্য করুন