ভিডিও বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

বগুড়ায় দিনভর বৃষ্টি, বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে পৌরবাসী

বগুড়ায় দিনভর বৃষ্টি, বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে পৌরবাসী। ছবি : শফিকুল ইসলাম শফিক

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিতে শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। দুপুরের পর বৃষ্টি থামলেও জনজীবনে নেমে আসে ভোগান্তি। স্থবির হয়ে যায় জনজীবন। রাস্তাঘাটে পানি উঠে যাওয়ায় শহরের মূল সড়ক সাতমাথা থেকে স্টেশন রোড, গোহাইল রোডসহ বেশকিছু সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।

এ অবস্থায় বিপাকে পড়েন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ। শহরময় জলাবদ্ধতার জন্য অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নিয়ম না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণ, সময়মত পরিস্কার না  করার জন্য পৌর কর্তপক্ষকেই  দায়ী করেন পৌরবাসী। এ অবস্থার মধ্যেই আবহাওয়া অফিস অবশ্য সুখবর দিতে পারেনি। আগামী এক সপ্তাহ এমন বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আগের দিন বৃষ্টি হলেও আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) আষাঢ় মাসের শেষ দিনে সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথাসহ বাদুরতলা, চকসুত্রাপর, সেউজগাড়ী, খান্দার, ফুলতলা, কৈগাড়ি, স্টেডিয়াম এলাকা, মালগ্রাম, রহমান নগর, মালতিনগর, সবুজবাগ এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়, অনেক বাড়িতে পানি প্রবেশ করে।

ড্রেনের পানি, রাস্তার পাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনার পঁচা গন্ধে এলাকাগুলোর বেশিরভাগ বাড়ির মানুষ সারাদিন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এতে করে উল্লেখিত এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। কখনো মাঝারি এবং কখনো ভারি বৃষ্টিপাতের জন্য  মানুষ একান্ত প্রয়োজন ছাড়া  বের  হতে পারেননি।

এদিকে দিনের আলো ফোটার পর থেকেই শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে শহরে যানবাহনের স্বল্পতা দেখা দেয়। এতে অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাস্তায় বের হওয়া মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক জায়গায় সময়মত যানবাহন পাওয়া যায়নি। যানবাহন পেলেও বেশি ভাড়া গুণতে হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও যাত্রী সংকটে পড়েছেন পরিবনহনগুলোও।

আরও পড়ুন

বগুড়া জামিল নগরের বাসিন্দা নার্গিস বেগম দৈনিক করতোয়া’কে জানান, তার মেয়ে পরীক্ষা বেলা ১টা থেকে। বাড়ির বাইরে বের হয়ে বৃষ্টির কবলে পড়েন। রান্তায় যানবাহন না পেয়ে ছাতা নিয়ে হাঁটা শুরু করেন। পরে একটি রিকশা পেয়ে তাতে চেপে স্টেশন রোড দিয়ে সাতমাথায় মেয়ের স্কুলে পৌঁছাতে পানি এবং ভয়াবহ যানজটে পড়েন। ভিজতে ভিজতে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর হলে পৌঁছান। দুষলেন পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। ক্ষোভ ঝেরে বললেন, পৌর সুবিধা পাচ্ছেন না পৌরবাসী।

এমনই ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন। বাড়ি সুজবাগ এলাকায়। একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। বাসা থেকে বের হয়ে কারমাইকেল রোড পর্যন্ত আসতে পুরো শরীর ভিজে গেছে। এমন বৃষ্টি, ছাতা মানছিল না। রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। অফিসে কাজ করার জন্য পলিথিনে আরও একটা ড্রেস নিয়ে বের হয়েছেন। এই এলাকার এই কষ্ট প্রত্যেক বছরের। সমাধান দেখছেন না।

সাতমাথার সপ্তপদী মার্কেটের পাশে ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান করেন শফিকুল ইসলাম। সড়কে পানি থাকায় হেঁটে দোকানে আসছেন না কেউ। বিকেল পর্যন্ত কোন বিক্রি হয়নি। ময়লা-কাঁদা আর পানি একাকার হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না। বৃষ্টির কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে মানুষ বের হননি। এ কারণে সড়কে ভিড় ছিল কম। যানবাহনে যাত্রীও কম।

বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যে কারণে বৃষ্টি হচ্ছে। ২৪ ঘন্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। গতকাল বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জ কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্পত্তি নয়,গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের: সারজিস

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা: পাথর নিক্ষেপকারীকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যমজ বোন এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে

বগুড়ার সান্তাহারের যুবক নওগাঁ থেকে নিখোঁজ

জেলা প্রশাসকের আর্থিক সহায়তা পেলেন দুই শিক্ষার্থী

বগুড়ার ধুনটে যুবলীগ নেতা চাঁন গ্রেফতার