ভিডিও শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

ঘরে বসেই তৈরি কেক বিক্রি করে বোচাগঞ্জের ঝলকের মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকা

ঘরে বসেই তৈরি কেক বিক্রি করে বোচাগঞ্জের ঝলকের মাসিক আয় ৩৫ হাজার টাকা

সাজ্জাদুল আজম সাজ্জাদ বোচাগঞ্জ  (দিনাজপুর) থেকে ঃ  কেক খেতে কে না পছন্দ করে, ছোট থেকে বড় সবার কাছে কেক মানে আলাদা একটা ভালোলাগা। শুধু তাই নয়, বর্তমানে যে কোন উপলক্ষ্য বা খুশির দিনে কেক কাটা হয়ে থাকে। আর এই কেক তৈরি করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার মেয়ে সিনথিয়া ঝলক। এখন নিজের হাতের বানানো কেক বিক্রি করে মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

সফল নারী উদ্যোক্তা সিনথিয়া ঝলক বলেন, আমি স্ব-নির্ভরশীল হওয়ার জন্য ২০১৫ সালে “চিলড্রেন কেয়ার কোচিং সেন্টার” নামে একটা কোচিং সেন্টার চালু করি। সেখানে আমার তত্ত্বাবধানে ২ জন শিক্ষক ছিল। অনেক ভালো নাম ডাক হয়েছিল কোচিং সেন্টারের। কিন্তু করোনা শুরুর পর থেকে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ রাখার কারণে ধস নামা শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রী অনেক কমে যায়। তখন কোচিং সেন্টারটি আমি বন্ধ করে দেই।

তারপর একদিন দিনাজপুরে এক আপুর সাথে দেখা হয় আর সেখানে উনার একটা কেক খেয়েছিলাম যেটার টেষ্ট আমার অনেক ভালো লাগে । তখন থেকে আমার আগ্রহ হল কেক তৈরি করার ও শেখার।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন কেক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকি তখন আমার কোর্স ফি দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। আমি তখন কিছু ঋণ নিয়ে কেক এর ক্লাসে ভর্তি হই। কিন্তু আজ আমি ভাবি তখন যদি আমি খরচের ভয় করে পিছিয়ে যেতাম আজকে এই স্থানটা পেতাম না।

সিনথিয়া ঝলক আরও বলেন, কেক বানানো শেখার পর আমিsana homemade cake and food gallery  নামে একটি পেজ তৈরি করি। অনলাইনে পোস্ট করি। সেখান থেকে আস্তে আস্তে অর্ডার পেতে শুরু করি। প্রথম প্রথম মাসে ৩-৪ টা অর্ডার আসতো। কেননা তখন বোচাগঞ্জের মানুষের কাছে এই কেকগুলো অনেক দামি মনে হতো। কিন্তু যখন তারা কোয়ালিটি আর টেষ্ট বুঝতে শুরু করলো তখন আস্তে আস্তে আমার অর্ডার বাড়তে থাকে। এখন আমি দিনে ৭-৮ টা কেক অর্ডার পেয়ে থাকি। কখনও কখনও ২০ থেকে ৩০ পাউন্ডও অর্ডার পেয়ে থাকি।

তিনি বলেন, হোমমেড কেকের প্রতি মানুষের ধারণা বদলেছে। তারা জানেন, ঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে কোয়ালিটি মানের কেক তৈরি করা যায়। আর বোচাগঞ্জে দিন দিন এসব কেকের চাহিদাও বাড়ছে।’

আরও পড়ুন

আপনি কি কেক তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নারী উদ্যোক্তা ঝলক বলেন, আমি গত ১ বছর থেকে কেক এর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছি। গত ১ বছরে আমার কাছে ৩৪ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু আপুরা আমার মতো নারী উদ্যোক্তা হয়েছে। আমার মত যেনো আরো নারীরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে তাই আমি "বোচাগঞ্জের উদ্যোক্তাবর্গ" নামে একটি গ্রুপ চালু করি। সেখান থেকে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়। এটাই ছিল আমার লক্ষ্য।

কোন ধরনের কেক বানাতে পারদর্শী, এমন প্রশ্নের জবাবে ঝলক বলেন, আমি বিভিন্ন প্রকারের কেক তৈরি করে থাকি। তার মধ্যে ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক, চকলেট স্পঞ্জ কেক, রেড ভেলভেট স্পঞ্জ কেক, অরেঞ্জ ডিলাইট স্পঞ্জ কেক, স্ট্রবেরি স্পঞ্জ কেক, ব্ল্যাক ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, হোয়াইট ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, মার্বেল কেক, কাপকেকসহ বিভিন্ন ডিজাইনের কেক তৈরি করে থাকি। এছাড়াও আমি ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী হুবহু ডিজাইন সংবলিত কেক তৈরি করে দিয়ে থাকি।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি, এমন প্রশ্নের জবাবে নারী উদ্যোক্তা ঝলক বলেন, আমি ভবিষ্যতে আমার কেক এর একটি সুন্দর কারখানা করতে চাই। যেখানে সুন্দর পরিবেশে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি হবে এবং কিছু মানুষের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হবে। আমি নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করতে চাই। কেক এর পাশাপাশি অন্যান্য খাবার সারা দেশের মানুষ কে পৌঁছে দিতে চাই।

 

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মারক্রাম ও বাভুমার শক্ত জুটিতে ট্রফি জয়ের পথে দক্ষিণ আফ্রিকা

বগুড়ার ধুনটে পাকা সড়ক ভেঙে পুকুরে বিলীন, ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বিয়ে বাড়িতে আদিবাসী কিশোরী গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ২

বগুড়ায় ইসমাইল আকন্দ নামের এক যুবক ছুরিকাহত

বগুড়ার সোনাতলায় ১১ মামলার পলাতক আসামি মোশারফ গ্রেফতার

বগুড়ার শেরপুরে সুদের টাকার জন্য নিয়ে যাওয়া গাভীটি ফেরত পেলেন অঞ্জনা রাণী