ভিডিও মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় সহযোগিতা করবে চীন

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মৎস্য চাষ ও গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

রবিবার (১ জুন) ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বিষয়ক চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে চীনা ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একটি বড় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদানকারী চীনা মন্ত্রী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি।

চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘আমার সঙ্গে আসা চীনা কোম্পানিগুলো খুবই উচ্ছ্বসিত। আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছেন। চীনা কোম্পানিগুলো আমাকে বলেছে, আপনাদের উদ্যোগের পর তারা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।’

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাত ১০টার পরেও বাংলাদেশের শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন এবং পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে।

 

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে এবং গভীর জলে সামুদ্রিক মৎস্য ও নদীর মৎস্য আহরণের বিপুল সম্ভাবনা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চাইনিজ ছোঁয়ায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকে প্রোডাকশন ইউনিটে রূপান্তর করা যেতে পারে।’

 

কৃষিজমি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রগুলোর কথা উল্লেখ করে চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কৃষির কোন কোন ক্ষেত্রে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা করতে পারি, তা জানতে আগ্রহী।’

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও বলেন, ‘আমি মনে করি, কৃষি শুধু একটি শিল্প নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক সংগঠন।’

মৎস্য ও সামুদ্রিক অর্থনীতির বিষয়ে তিনি এ ক্ষেত্রে চীনের দক্ষতার কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা চান।

চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য প্রযুক্তি, বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারে চীন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’

আরও পড়ুন

এর আগে চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা যখন বাংলাদেশের পাট খাত পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন, তখন প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়টিও উল্লেখ করেন চীনা মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশ থেকে বছরে ১০০ মিলিয়ন ডলারের পাট আমদানি করে, যা বাংলাদেশের পাট রফতানির প্রায় ১০ শতাংশ এবং গবেষণা ও পণ্য বহুমুখীকরণের ফলে এটি বহুগুণে বৃদ্ধি পেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর চীনের পাট ব্যবসায়ীরা তাৎক্ষণিকভাবে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের পাটপণ্য নিয়ে কিছু গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা শুধু ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। গবেষণায়ও সহযোগিতা করতে হবে। বাংলাদেশ গবেষণা কাজে যোগ দিলে আমি মনে করি পাট আমাদের জন্য খুবই উপযোগী পণ্য হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে পারেন।’

তিনি চীনা মন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা এত চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়ে আসার জন্য এবং তারপর দিনের শুরুতে চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেওয়ার জন্য চীনের মন্ত্রীর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আমরা একেবারে আনন্দিত। আপনার আজকের ভাষণটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অনেক বিনিয়োগকারী এসেছেন। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো সংকেত, কারণ পুরো জাতি দেখছে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করেন । চীনা মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জুলাই সনদের আগে যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হয় : নাহিদ ইসলাম

সদ্যবিবাহিত দম্পতির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

গাজীপুরে কারখানার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর

রূপপুরের বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে

ভারী বৃষ্টির আভাস তিন বিভাগে

করাচির জেল থেকে পালাল দুই শতাধিক কয়েদি