ভিডিও শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদাসিনতা

বগুড়ায় পিইডিপি-৪ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের ওয়াশ ব্লকের কাজ করা হচ্ছে

বগুড়ায় পিইডিপি-৪ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের ওয়াশ ব্লকের কাজ করা হচ্ছে, ছবি সংগৃহীত

স্টাফ রিপোর্টার : প্রাইমারি এডুকেশন  ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (পিইডিপি-৪) প্রকল্পের আওতায় বগুড়ায় চলমান ওয়াশ ব্লকের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ওয়াশ ব্লকের কাজ বাস্তবায়ন করছে।

২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বগুড়ায় প্রায় ৮শ ওয়াশ ব্লকের অনুমোদন হয়, এরমধ্যে ৫০০ টির কাজ চলমান রয়েছে। চলতি বছরের ২৫ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও অনেক স্কুলে কাজ কয়েক দিন আগে শুরু হয়েছে। আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে হস্তান্তরের আগেই ভেঙ্গে যেতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নির্মানাধীন কাজে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করলে অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়ে। বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কাশিহাটা, চামুরপারা, বৈঠাভাংগা উত্তরপাড়া, তেলিহাটা পাচানি পারাসহ বেশ কিছু বিদ্যালয়ের নির্মান কাজে প্রথম তলার মেঝে ঢালাই দেয়া হয়েছে রড ছাড়া। এছাড়া জাগুলি, চকরাধিকা, একবারিয়া, পাচকাতলীসহ বহু  বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় নাম মাত্র রড দিয়ে ঢালাই দেয়া হয়েছে। মেঝেতে আর সি সি ঢালাইয়ের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে সি.সি ঢালাই তাও আবার চিকন বালু(বিট) বালু দিয়ে। টয়লেটের কমোডে লো-ডাউন সিরামিকে লো ডাউনের পরিবর্তে প্লাষ্টিক লো ডাউন ব্যবহার করা হয়েছে। ওয়াশ বলকের ছাদে দেয়া হয়নি জল ছাদ ঢালাই । এছাড়া নিম্নমানের দরজা, জানালা ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মান শেষ হবার আগেই ভবনে ফাটল ধরেছে, কমপ্লিট মেঝেগুলোতে পানি জমে থাকে, টয়লেটের কুপ, স্লাবসহ সেফটি ট্যাংকিগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। বিদ্যুতের ওয়েরিং এর ভেতর দিয়ে পানি আসছে।

বগুড়া সদরের চকহবিবের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এই বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লোক নির্মানের জন্য ২০২৪ সালে গর্ত করে, এর পর রমজান মাসে ওই গর্তে পানি জমলে সেখানে খেলতে নেমে দের বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

প্রকল্পটির ইষ্টিমেটে উল্লেখ আছে, সুনামধন্য কোম্পানীর অধিক মজবুদ মানের ২৭ কেজি ওজনের সাড়ে ৭ হাজার টাকা মূল্যের সলিড পিভিসি দরজা লাগানোর কথা থাকলেও, (শত-শত) অর্থাৎ সবগুলো দরজাই দেয়া হয়েছে নিম্নমানের মাত্র কয়েক হাজার টাকা মূল্যের ফাঁপা দরজা। টয়লেটে ফ্লাস করার জন্য সিরামিকের লোডাউন উল্লেখ থাকলেও সবগুলোই দেয়া হয়েছে প্লাষ্টিকের, যা লাগানো শেষ না হতেই খুলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেপটিক ট্যাংকি আকারে ছোট করা হয়েছে। ইট, রড, সিমেন্টসহ সবধরনের সামগ্রী দেয়া হয়েছে একেবারেই নিম্নমানের।

বিদ্যালয় গুলোতে নিম্ন মানের কাজ করার বিষয়ে কথা বললেও তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।  অনেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন নিম্ন মানের কাজ করায় তারা ওয়াশ ব্লক বুঝে নিতে না চাইলেও চাপে বুঝে নিতে হয়েছে। আওয়ামী শাসনামল আওয়ামীলীগের নেতাদের চাপে এত অনিয়ম তারা মেনে নিয়েছেন। তখন কেউ মুখ খুলতে পাড়েনি। 
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজোয়ান হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন। তিনি অভিযোগ পেলেই সেখানে যাচ্ছেন এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানাচ্ছেন। তিনি বলেন জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। তাই তিনি কাজের তাগাদাও দিচ্ছেন। আমরা অভিযোগও দিচ্ছি বিভিন্নস্থানে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা চাই শিশুদের ব্যবহারের কাজ যথাযথভাবে করা হোক।
বগুড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী যারা রয়েছেন তারা কাজ গুলো দেখছেন। এটা তাদের কাজ তারা দেখভাল করবেন। দেখভালের দায়িত্ব তার নয়। তিনি এ্ও বলেন যেখানে সমস্যা রয়েছে তা দেখা হবে। 
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, ওয়াশ ব্লকের কাজের মান খারাপ হলে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলা হবে। কোন ভাবেই কাজ খারাপ করতে দেওয়া হবে না। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান। 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার মহাস্থান হাটে দেখা মিলল ১০ লাখ টাকার গরু! | Qurbanir Hat | Daily Karatoa

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধে ট্রাম্পের আদেশে আবারও স্থগিতাদেশ

বগুড়ার যমুনাচরের প্রতিটি বাড়িতেই প্রস্তুত কোরবানির গরু | Sariakandi | Bogura | Daily Karatoa

বৃষ্টির দিনে থাকুক আচারি ভুনা খিচুড়ি

দক্ষিণ কোরিয়ায় নৌবাহিনী প্লেন বিধ্বস্ত, বেঁচে নেই আরোহীদের কেউ

খোলা জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করছে ফ্রান্স