প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্কুলছাত্রীকে হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড
_original_1748350088.jpg)
নেত্রকোনায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্কুলছাত্রী মুক্তি বর্মণকে (১৬) হত্যার দায়ে মো. কাওছার মিয়া (২০) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. কাওছার মিয়া নেত্রকোনা সদরের বারহাট্টা উপজেলার প্রেম নগর গ্রামের মো. শামছু উদ্দিনের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মুক্তি রানী বর্মণ ও প্রেম নগর গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মণের মেয়ে। সে প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিখিল চন্দ্র বর্মনের মেয়ে মুক্তি রানী বর্মন বারহাট্টা থানাধীন প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। মুক্তি বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে কাওছার মিয়া প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে মুক্তি রানীকে নানাভাবে উত্যক্ত করত। মুক্তি বিষয়টি তার বাবাকে জানালে তিনি আসামির পরিবারকে জানান। এতে আসামি আরও বেপরোয়া হয়ে তার মুক্তি রানীকে আরও উত্যক্ত করতে থাকে।
২০২৩ সালের ২ মে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে মুক্তি রানি বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের উদ্দেশে বের হয়। পরবর্তীতে মুক্তি রানী ওই দিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিদ্যালয় ছুটির পর সহপাঠি ও বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে প্রেমনগর গ্রামের কংস নদীর পাড়ে পুরাতন ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে কাঁচা রাস্তার পাশে পৌঁছা মাত্রই কাওছার মিয়া পেছন দিক থেকে এসে দা দিয়ে মুক্তি রানীর মাথা ও ঘাড় লক্ষ্য করে কোপাতে থাকে। এতে মুক্তি রানীর মাথা ও ঘাড়ে গুরুতর জখম হয়।
আরও পড়ুনএসময় মুক্তি রানী মাটিতে পড়ে গেলে তার সহপাঠি ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়া যান। মুক্তির অবস্থা গুরুতর দেখে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পরে মুক্তি রানীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় আসামির উপস্থিতিতে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট দেলুয়ারা বেগম।
মন্তব্য করুন