কাকরাইলে জমায়েত বাড়ছে জবি শিক্ষার্থীদের, যোগ দিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা

তিন দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমাবেশে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক শিক্ষার্থীরা। রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে এখনো সরকার থেকে কোনো কাঙ্ক্ষিত বার্তা আসেনি।
আজ শুক্রবার (১৬ মে) ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছি’ লেখা ব্যানারে নিয়ে কাকরাইল মোড়ের আন্দোলনে যোগ দেন তারা।
সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জবির সাবেক শিক্ষার্থী ত্রিদিব সাহা বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর ঘাত-প্রতিঘাত আমরা মেনে নিতে পারি না। উপদেষ্টা যেভাবে আমাদের ছাত্রসমাজের ওপরে হুমকি দিচ্ছেন, তিনি আমাদের আন্দোলন করতে দেবেন না, তিনি বলার কে? এই দেশ আমাদের। এদেশে রক্ত দিয়েছে আমার ছাত্র ভাইয়েরা। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং সাবেক যারা আছেন, সবাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামাব না।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যেভাবে এ রাষ্ট্র থেকে গিয়েছে, জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করে দাবি আদায় না হলে যারাই ক্ষমতায় থাকবে, তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে হবে।
আরও পড়ুনসাবেক শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের তিন দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তারা বলেন, এ তিন দফা দাবি যৌক্তিক। অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত এ তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া উচিত। দাবিগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়নের ঘোষণা যতক্ষণ না দেওয়া হবে, ততক্ষণ এ আন্দোলন চলবে।
এর আগে গতকাল রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় মিটিং করলেও কোনো সমাধান আসেনি। পরবর্তীতে রাত ১২ টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আজ জুম্মার পরে গণ অনশন শুরু করবেন।
গত ১৪ মে থেকে এখানে কর্মসূচি পালন করছেন জবির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। তার আগের দিন গত ১৩ মে দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসিতে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ১৪ মে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে ১৪ মে ঘোষিত কর্মসূচি ‘লং মার্চ টু যমুনা’ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড় এলেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে। এরপর থেকে কাকরাইল মোড় ঘিরে চলছে জবির শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি।
মন্তব্য করুন