ভিডিও সোমবার, ১২ মে ২০২৫

বাঁধ খুলে দিল ভারত, বন্যার শঙ্কায় পাকিস্তান

চেনাব নদীর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোন ধরনের সতর্কতা ছাড়াই চেনাব নদীর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এতে তুমুল বেগে পানি পাকিস্তানের দিকে যাচ্ছে। শুস্ক মৌসুমে পাকিস্তান অংশে নাব্যতা সংকট থাকায় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা ঘিরে ধরেছে নদীতীরবর্তী মানুষদের।

দ্য ইকোনমিক টাইমস জানায়, ভারত রোববার (১১ মে) রামবানে চেনাব নদীর ওপর নির্মিত বাগলিহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের আরও একটি গেট খুলে দেয়। এই ঘটনার আগে শনিবার বাঁধের দুটি গেট খোলা হয়েছিল। গেটগুলো সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। শুক্রবার এই অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারত অংশে পানির চাপ বাড়ে। বাঁধের ধারণক্ষমতা কম থাকায় পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, পানির চাপ কমাতে বাধ্য হয়েই ভারত গেট খুলেছে। তবে ভারত সরকার বাঁধের গেট খোলার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

সিন্ধু চুক্তি ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, ৬টি নদীর মধ্যে ভারত পায় পূর্বের ৩টি নদী (রবি, বিয়াস, সুতলেজ) এবং পাকিস্তান পায় পশ্চিমের ৩টি নদী (ইন্দাস, ঝেলাম, চেনাব)। ভারত এই নদীগুলোর পানি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে পারে, তবে পানি সংরক্ষণ বা প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। এরপর চেনাব ও ঝেলাম নদীর পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে দেশটি। এমনকি সিন্ধুর পানিপ্রবাহ বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ভারতের রাজনীতিবিদরা। এরই মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়ন সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়। টানা কয়েকদিনের সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। কিন্তু সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত বহাল রাখে ভারত।

আরও পড়ুন

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেহেতু সিন্ধু চুক্তি কার্যকর নেই সেহেতু ভারত চেনাব নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। নিজেদের প্রয়োজনে আটকে রাখছে আবার অতিরিক্ত প্রবাহ মোকাবিলায় গেট খুলে পাকিস্তানের দিকে পানি ছেড়ে দিচ্ছে। গত সপ্তাহ ধরে ভারত বেশ কয়েকবার গেট বন্ধ এবং খুলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে রামবানের বাগলিহার বাঁধের দুটি গেট বৃহস্পতিবারও খুলে দেওয়া হয়েছিল। একই পরিস্থিতি ঝেলাম নদীতে। চুক্তি স্থগিতের পর কিছু দিন বাঁধের গেট বন্ধ রাখে ভারত। কিন্তু ভারতীয় অংশে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সেটি বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি। নিয়মিত বাঁধের গেট বন্ধ ও খুলে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন।

ভারতের এমন আচরণ পাকিস্তানকে ভাবাচ্ছে। দেশটির সেচব্যবস্থা মূলত পশ্চিমের নদীগুলোর ওপর নির্ভরশীল। পানিপ্রবাহে সামান্য পরিবর্তনও ফসল উৎপাদনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ জলবিদ্যুৎ থেকে আসে। উজানে পানিপ্রবাহ কমে গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। আবার হঠাৎ বেড়ে গেলে প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন মামলায় ৭ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেফতার

কুষ্টিয়ায় ৪০টি দেশীয় শালিক পাখি উদ্ধার

পাবনার সুজানগরে ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকট

আইভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর

র‌্যাব পুনর্গঠনে কমিটি গঠন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুকুরে গোসলে নেমে কিশোরের মৃত্যু