ভিডিও রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট সহস্রাধিক পরিবারের চরম দুর্ভোগ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট সহস্রাধিক পরিবারের চরম দুর্ভোগ

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বেশ কিছু এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকটের কারণে সহস্রাধিক পরিবারের নিত্যদিনে চরম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। গত বুধবার সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, তেঁতুলিয়া পুরাতন বাজার থেকে বাংলাবান্ধার ঝাড়ুয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সীমান্ত ঘেঁষে পাহাড়ি খরস্রোত মহানন্দা প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করেছে।

এই খরস্রোত নদীর উজানে ভারত ফুলবাড়ি নামকস্থানে ৯০ দশকে একটি বাঁধ নির্মাণ করে নদীর পানির গতিপথ অন্যদিকে প্রবাহিত করেছে। ভারত বাঁধ নির্মাণের প্রথমদিকে নদীতে কিছুটা পানিপ্রবাহ বহমান ছিল। কিন্তু পর্যায়ক্রমে ভারত মহানন্দা নদীতে ভাটির দিকে পানিপ্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে মহানন্দা নদী মরাখালে পরিণত হয়েছে।

নদীতে পানিপ্রবাহ না থাকায় এর বিরুপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা ২০ কিলোমিটার এলাকার জনসাধারণের জীবনমান ও প্রকৃতির  ওপর। মহানন্দা নদীর পানি প্রবাহ কৃত্রিম কারণে শুকিয়ে যাবার পর দুই দশকে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে নদীর সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় নলকূপ, চাপকল, সাধারণ মোটর পাম্পে পানি উঠে না। ফলে এলাকায় সুপেয় পানির চরম সংকট তৈরি হয়েছে।

সুপেয় পানি সংকটাপন্ন এলাকাগুলো হলো- তেঁতুলিয়া পুরাতন বাজার, সিদ্দিকনগর, ঈদগাহ বস্তি, সাহেবজোত (ডাঙ্গিবস্তি), মমিনপাড়া, তেলিপাড়া, মাগুড়া, উত্তর দর্জিপাড়া, ঝাড়ুয়াপাড়া, কাশিমগজ, সিপাইপাড়া, সন্ন্যাসিপাড়া।  এরআগে ওইসব এলাকায় ৫৫ থেকে ৭০ ফিট নূলকূপের বোডিং করলে প্রচুর পানি পাওয়া যেত। এখন ১শ’-১২০ ফিট নলকূপ বোডিং বসানোর পরও সাধারণ পাম্পে সঠিকভাবে পানি উঠে না। এক্ষেত্রে যেসকল পরিবার সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করেছে তারাই পানি পাচ্ছে।

তেঁতুলিয়া সদরের সিদ্দিকনগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার সুপেয় পানির ভাবে নিত্যদিনের কার্যক্রম সমাধা করতে চরমদুভোর্গ পোহাচ্ছে। এসব পরিবারের লোকজন এলাকায় যাদের বাড়িতে সাবমার্সিবল পাম্প আছে তাদের বাড়ি থেকে পানি এনে খাচ্ছে। এলাকাবাসী রাজিব, আব্দুল আজিজ, মকবুলম, তৌহিদুল, হোসনে আরা, আরশেদা মত অসংখ্য সাধারণ পরিবার সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। তাদের দাবি সরকারিভাবে এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হোক।

আরও পড়ুন

তেঁতুলিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর উপ-সহকারী প্রকৌশলী-মিঠুন কুমার রায় জানান, ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত অপব্যবহারের কারণে প্রাথমিক পানির স্তর নিচে গেছে। যে কারণে উঁচু এলাকার চাপকল/নলকূপে শুস্ক মৌসুমে পানি উঠে না। আমরা উল্লেখিত এলাকা জরিপ করে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষে জানিয়েছি।

পঞ্চগড় জেলা জনস্বাস্থ্য অধিপ্তর এর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, নদী ব্যাজ এলাকাগুলোতে এই সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় সদর ও দেবীগঞ্জের কিছু এলাকায় বিগত বছর খরা মৌসুমে পানির সমস্যা হচ্ছে।

বিষয়টি হেড অফিসে জানানো হয়েছে আগামীতে ‘তারা পাম্প’ নামে প্রকল্প আসছে। সমস্যাজনিত এলাকায় তারা পাম্প স্থাপন করা হবে। এছাড়াও কমিউনিটি বেইজ অনুয়ায়ী গভীর নলকূপ স্থাপনের ব্যাপারেও প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ হলে আশা করি এই সমস্যা নিরসন হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাতমাস ধরে রাস্তার কাজ বন্ধ, উধাও ঠিকাদার

বগুড়ার শেরপুরে ২টি ইজিবাইকসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার

নওগাঁর ধামইরহাটে পুুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

নওগাঁর মান্দায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দাখিল পরীক্ষার্থী নিহত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ২৫ মণ পিরানহা মাছ জব্দ

বগুড়ার সোনাতলায় আ’লীগ নেতাসহ সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার