পুলিশের এসআই’র কাছে উৎকোচ, দুদক’র ডিএডি সুদীপ বরখাস্ত

কোর্ট রিপোর্টার : জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে পুলিশের এসআই আলমগীর হোসেনকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলায় তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় দুদক চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী গত ১৬ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন সইকৃত আদেশমূলে তাকে এই বরখাস্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট তথ্যে জানা গেছে, বগুড়া ডিবি পুলিশের তৎকালীন এসআই পরবর্তিতে সোনাতলা থানার এসআই (নিরস্ত্র) পদে কর্মরত আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতির কথা বলে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী ঘুষ দাবি করেন। তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায় ৭ লাখ টাকা উৎকোচ হিসেবে দাবি করলে এসআই আলমগীরনন খালাতো বোন সুমাইয়া শিরিনের মাধ্যমে কিছু টাকা সুদীপ চৌধুরী গ্রহণ করেন। পরে এড. কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। এরপরে এড. সৈয়দ আসিফুর রহমানের মাধ্যমে আরও এক লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ করা হয়। এসআই আলমগীরকে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ও মামলা থেকে অব্যাহতির দেওয়ার জন্য তার খালাতো বোন সুমাইয়া শিরিন আইনজীবী এড. সৈয়দ আসিফুর রহমানের সাথে তার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোনের উৎকোচ দাবি ও গ্রহণের কথোপকথন অডিও রেকর্ড ফরেনসিক ল্যাবের পরীক্ষা করে প্রমান পাওয়া যায়। এরপর সুদীপ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রজু করা হয়। সুদীপ চৌধুরী বিভাগীয় মামলার অভিযেগের জবাব ব্যক্তিগত শুনানি চান। পরে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনঃরায় তদন্ত শেষে ওই বছরের ২ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদনে সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অসদাচারণ ও ক্ষমতা অপব্যবহারসহ দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
আরও পড়ুনউল্লেখ্য, দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়ের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, দুদক আসামি এসআই আলমগীর হেসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধন শুরু করে এবং অনুসন্ধান শেষে ওই কর্মকর্ত দুদক’র তৎকালীন সহকারী পরিচালক রবীন্দ্র নাথ চাকী অনুসন্ধান প্রাতবেদন দাখিল করেন। উক্ত অনুসন্ধন প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুদক এসআই আলমগীরকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে। এসআই আলমগীর গত ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। পরে মামলাটির অভিযোগ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান তদন্ত শেষে ওই আসামির বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার ২২২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ার অভিযেগপত্র দাখিল করা হয়।
মন্তব্য করুন