ভিডিও সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বনায়ন জরুরি

বনায়ন জরুরি

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটি দেশে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশে বনভূমির সঠিক পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এর পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে। কোনো কোনো সূত্রের দাবি, বাংলাদেশে এখন বনভূমির পরিমাণ ৫ শতাংশের নিচে এসেছে এবং দ্রুত তা কমছে। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ বা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তাভাবনাকারী দেশগুলো তার বনভূমি রক্ষার কাজটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশে এখনো তেমন কোনো প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় না। ফলে এখনো নির্বিচারে বন ধ্বংসের প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে।

পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হয়, সারা দেশে বন বিভাগের দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বনভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে। দখলকৃত বনভূমির মূল্য প্রায় ১০ হাজার ১৯৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। দখলদার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৬। অবৈধভাবে দখল করা জমিতে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে হাট-বাজার গড়ে তোলা হয়েছে। চাষাবাদও হচ্ছে। অন্য এক হিসাবে দেশে এখন বিভিন্ন শ্রেণির বনভূমির পরিমাণ ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ একর। এর মধ্যে দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বনভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে।

অবৈধভাবে দখল করা সংরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর। এই সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে রেখেছে ৮৮ হাজার ২১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। অবৈধভাবে দখল করা অন্যান্য বনভূমির পরিমাণ এক লাখ ১৮ হাজার ৫৪৫ একর। এসব দখল করে রেখেছে ৭২ হাজার ৩৫১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। অবৈধভাবে দখলকৃত বনভূমিতে হাট-বাজার, কটেজ, রিসোর্ট, কলকারখানা প্রভৃতি ঘরবাড়ি, কৃষি ক্ষেত, বাগান, চারণভূমি, শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি গড়ে তোলা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ২০৩০ সালের মধ্য বন উজাড় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। সেই সঙ্গে নতুন করে বনসৃজনের লক্ষ্যও বারংবার ঘোষণা করেছেন তারা। সার্বিকভাবেই লক্ষ্য করা গেছে দেশের তাপমাত্রা বাড়ছেই। আমাদের দেশ নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলে হওয়ার পরেও ক্রমশ বদলে যাচ্ছে ঋতু বৈচিত্র্য। এক জরিপেও দেখা গেছে, প্রত্যেক ঋতুতেই বেড়ে যাচ্ছে তাপমাত্রা। চার দশকের বেশি সময়ের আবহাওয়ার পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে আমরা নানা ধরনের পরিবর্তন দেখতে পেয়েছি। এর মধ্যে আছে তাপমাত্রার হ্রাস- বৃদ্ধি, বৃষ্টি পাতের ধরন, সূর্যালোক ও মেঘের প্রবণতার পরিবর্তন।

আরও পড়ুন

আবহাওয়াবিদরা বলেন, আগে তাপপ্রবাহ বর্ষাকাল, জুনের শুরুতে শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এখন সেটা হচ্ছে না। তাপপ্রবাহের সময়সীমা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, এপ্রিলে শুরু হয়ে এটি অক্টোবর পর্যন্ত চলছে। একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশের জন্য অজীব ও জীব প্রতিটি উপাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা অত্যধিক হলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, কারণ ওই গ্যাস তাপশোষণ করে রাখে। বর্তমানে গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়া নামে যা সুপরিচিত; সেটা এ কারণেই হয়।

উদ্ভিদ বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে বাতাসে অক্সিজেন যোগ করে বায়ু মন্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত বজায় রাখতে সাহায্য করে। যার প্রভাবে উদ্ভিদ বায়ু দূষণ কম করে বাতাসকে বিশুদ্ধ রাখে। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তাই বন রক্ষা করতে হবে। জায়গা-জমি, বনভূমি দখলের সংস্কৃতির অবসান হওয়া দরকার।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজশাহীতে দুলাভাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালক খুন

টাকা ফেরত না দিয়েই চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেন এক ক্বারি শিক্ষক, শর্ত না মেনে চাকরি

বগুড়ায় এবার দেড়শ’ কোটি টাকার আগাম শীতকালিন সবজি চাষের লক্ষ্য

রাকসু নির্বাচনে মোট প্রার্থী ৩০৬ জন : চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ব্যালট নম্বর পেল প্রার্থীরা

বগুড়ার সোনাতলায় গোসাইবাড়ী-হাট করমজা সড়কের বেহাল দশা

যেকোন ইস্যুতে ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে : এজিএস মহিউদ্দীন খান