মায়ের সামনে খুঁটিতে বেঁধে যুবককে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

নিউজ ডেস্ক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর মসজিদের কাছে মায়ের সামনে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ইমরান হোসেন (২১) নামের এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতনের শিকার যুবক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। ইমরান ওই গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইমরান একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। শুক্রবার রাতে স্থানীয় তারাশাইল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় সন্ত্রাসী শহিদুর রেজা (রতন) মিয়াজির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় ইমরানের ডাক-চিৎকারে তার মা আফরোজা বেগম এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে ইমরানকে দৌলতপুর মসজিদের সামনে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মায়ের চোখের সামনে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে সাহস করেনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনে ইমরান অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা তাকে মৃত ভেবে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন ইমরানকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজ শনিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়।
আরও পড়ুনচৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাবেদ হোসেন বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে মুমূর্ষু অবস্থায় ইমরান হোসেনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনেরা। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।’’
ইমরানের মা আফরোজা বেগম বলেন, ‘‘শহিদুর রেজা (রতন মিয়াজি) এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এলাকায় তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তার সামাজিক অপকর্মের বিরুদ্ধে আমার ছেলে প্রায়ই প্রতিবাদ করত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার ছেলেকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে ইমরান তারাশাইল বাজার থেকে ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। ছেলের চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে আমার চোখের সামনে ইমরানকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়।’’
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ইমরান নামে এক যুবককে নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজ আমাদের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
মন্তব্য করুন