গাইবান্ধার সাঘাটায় যমুনার চরে উৎপাদিত কাঁচামরিচ যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

সাঘাটা (গইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটার যমুনার চরে কৃষকের উৎপাদিত কাঁচা মরিচ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন সকালে খেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলে কৃষকেরা বিক্রির জন্য নিয়ে যান বাজারে। সেখানে আড়ত থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে মরিচ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষি অফিস জানায়, এবার উপজেলার চরাঞ্চলসহ ১০টি ইউনিয়নে ৪২৪ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে সিংহভাগ মরিচের আবাদ হয়েছে চরাঞ্চলেই। গতবারের তুলনায় এবার মরিচ চাষ দ্বিগুণ বেড়েছে।
উপজেলার জুমারবাড়ী হাটের আড়তে দেখা গেছে, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট কাঁচামরিচের বাজার। পাইকারেরা কৃষকের কাছ থেকে মরিচ কিনে বাজারেই স্তুপ করছেন। সেখানে শ্রমিকেরা এসব মরিচ রপ্তানির জন্য ওজন করে প্যাকেট করছেন।
বাজারে মরিচ বিক্রি করতে আসা জোবায়দুর রহমান ও আবু জাফর বলেন, গত বছর দাম কম হওয়ার কারণে মরিচ চাষ করে উৎপাদন খরচ ওঠেনি। এবার এখান থেকে দেশে বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর কারণে দাম ভালো পাচ্ছি। বিজলী মরিচের এবার বাম্পার ফলন হচ্ছে।
উপজেলার কাইপাড়া চরের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, গতবছরে এমন সময় ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে দাম পেয়েছি মাত্র ৬শ’ টাকা। এবার দাম প্রথমদিকে ৬ হাজার টাকা থেকে বিক্রি শুরু করেছি এখন পাচ্ছি ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায় বিক্রি করছি।
আরও পড়ুনকাঁচামরিচ দেশে বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার কারণেই এবার চাহিদা বেশি, দামও ভালো পাচ্ছি। ৮ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক মাসে ৫ লাখ টাকার কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে। আরও তিন মাসে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
জুমারবাড়ী বাজারের আড়তদার আমিরুল বলেন, উপজেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন রেকর্ড পরিমাণ কাঁচামরিচ কৃষকেরা বিক্রি করতে আসে। এর মধ্যে বেশির ভাগ মরিচ আসে চরাঞ্চল থেকে। এ বাজার থেকে প্রতিদিনই ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পাবনা, যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এ কারণে কৃষকেরা মরিচের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃসিবিদ সাদেকুজ্জামান জানান, কৃষি অফিসের তৎপরতায় ও দিকনির্দেশনায় কৃষকেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। কাঁচামরিচ বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষকের মধ্যে মরিচ চাষে আগ্রহ বেড়েছে। মরিচ ক্ষেতগুলোতে যেন কোনো ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সে জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা মরিচ এ দেশের অনেক জেলাসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়ায় কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন এবং লাভবান হচ্ছেন।
মন্তব্য করুন