ফেনীতে অপহরনের চারদিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার, আটক ৩

ফেনীতে অপহরণের ৪ দিন পর আহনাফ আল মাঈন নাশিত (১০) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ফেনী সদর উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ ময়লার ভাগাড় সংলগ্ন ঢাকা-চট্রগ্রাম রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বুধবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করেছে।
আটকরা হচ্ছেন- আশ্রাফ হোসেন তুষার (২০), মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিপাত (২০)। তারা সবাই ফেনী শহরের আতিকুল আলম সড়কের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এসপি হাবিবুর রহমান।
হাবিবুর রহমান বলেন, ৮ ডিসেম্বর বিকেলে ফেনী শহরের আতিকুল আলম সড়কস্থ লাইটিং হাউজিং কোচিং সেন্টারে পড়তে যায় ওই এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছেলে নাশিত। কোচিং শেষে ঘরে না ফেরায় ৯ তারিখে নাশিতের পিতা সোহাগ ফেনী মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। গত দুই দিন ধরে একটি মোবাইল থেকে নাশিতের পিতা সোহাগকে কল করে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, বুধবার তুষার নামের এক ব্যক্তির কথাবার্তায় নাশিতের পিতার সন্দেহ হলে সে পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ তুষারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাত ২টার দিকে তুষার অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে। পুলিশ তুষারের দেওয়া তথ্যে ঘটনায় জড়িত আরও দুইজনকে আটক করে।
আরও পড়ুনপুলিশ সুপার আটককৃতদের ভাষ্য উল্লেখ করে বলেন, অপহরণকারীরা ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত। ৮ তারিখ সন্ধ্যায় কোচিং সেন্টার থেকে ফেরার পথে ভিকটিমকে সিএনজি করে ঘুরতে বের হয় অপহরণকারীরা। পরে তাকে জুসের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দেওয়া হয়। এসময় ভিকটিমের পিতার কাছে কল দিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ঘুম থেকে উঠে ভিকটিম কান্নাকাটি শুরু করলে তাকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। পরে শিশু নাশিতের মরদেহ গুম করতে ফেনী শহরের নির্জন এলাকা দেওয়ানগঞ্জ রেললাইনের পাশে একটি ডোবার ভেতর লুকিয়ে রাখে। মরদেহটি পানিতে ভেসে না ওঠার জন্য ভিক্টিমের স্কুল ব্যাগে পাথর ভরে চাপা দেওয়া হয়। পরে আটকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মরদেহটি উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে আটকদের ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভিকটিমের পিতা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, কি কারণে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তা জানি না। তারা আমার কাছে ১২ লাখ টাকা চেয়েছে। আমি টাকা জোগাড় করে তাদের কল দিলে মোবাইল বন্ধ পাই। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
মন্তব্য করুন