লালন উৎসবে নীনা হামিদ, শ্রোতাদের মুগ্ধ করলেন মুন্নী
অভি মঈনুদ্দীন: জ্যামাইকার ম্যারি লুইস একাডেমিতে দ্বিতীয় বারের মতো এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক লালন ও লোক উৎসবের আয়োজন করে লালন পরিষদ ইউএসএ। এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ,ভারত, লন্ডন, কানাডা ও অ্যামেরিকার বিভিন্ন স্টেট থেকে প্রায় ২০০ শিল্পী ও কলা কুশলী অংশ নেন।
মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্ধোধন করেন জীবন্ত কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী নীনা হামিদ। এসময় তাঁর পাশে ছিলেন একাত্তরের কন্ঠ যোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, প্রধান উপদেষ্টা নুরুন আমিন বাবু’সহ আয়োজক ও অনুষ্ঠান সহযোগীরা। দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত এই লালন উৎসবে নতুন প্রজন্মের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে আগত গুনী সঙ্গীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নীর পরিবেশনা উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। বিশেষত তার গানে নীনা হামিদ মুগ্ধ হয়ে তার গায়কীর ভীষণ প্রশংসা করেন।
উদ্বোধনের পরপরই নীনা হামিদ’সহ সবাইকে পাশে রেখে মুন্নী প্রথম গেয়ে উঠেন, ‘আমার সোনার ময়না পাখি’ গানটি। এরপর সবার অনুরোধে নীনা হামিদও এই গান গেয়ে শোনান সবাইকে। মুন্নী এবং নীনা হামিদের পরপর একই গানের পরিবেশনায় পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে এক অন্যরকম ভালোলাগার সৃষ্টি হয়েছিলো। দিনাত জাহান মুন্নী বলেন,‘ আমার পরম সৌভাগ্য হলো যে আমি শ্রদ্ধেয় নীনা আপার পায়ের কাছে বসে গাইতে পেরেছি। জীবনে মাঝে মাঝে এমন কিছু সময় আসে যা বিশ্বাস করা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। আমার গান শেষ করার পর নীনা আপা আমার মাথায় হাত রেখে আমাকে আশীর্বাদ করলেন। এটা কতো বড় প্রাপ্তি তা ভাষায় প্রকাশের নয়। আমি এবারই প্রথম লালন উৎসবে অংশগ্রহন করেছি। রাত যতো গভীর হচ্ছিলো মানুষের উপস্থিতি যেন বেড়েই চলছিলো। কেউই অনুষ্ঠান শেষ করার আগে নিজের স্থান ছেড়ে যাননি। আয়োজকদের কষ্ট স্বার্থক হয়েছে।’
আরও পড়ুনএছাড়াও মুন্নী আলাদাভাবে আরো পরিবেশন করেন ‘আশা পূর্ণ হলোনা’ ও ‘বকুল ফুল বকুল ফুল’ গান দুটি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা মন্দিরা চক্রবর্ত্তীর পরিবেশনাও দর্শককে মুগ্ধ করে। লন্ডন থেকে আসা অদিতি রায়ের বিশেষ আলেখ্য হু এম আই দর্শক বেশ উপভোগ করেন। উৎসবের অন্যতম আকর্ষন ছিলো রোড আইল্যান থেকে যোগ দেয়া মহিতোষ তালুকদার তাপস ও তার দলের বিশেষ পরিবেশনা। লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সব প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন।
লালন শাহ এমন একজন মানুষ যিনি সংগীতের মাধ্যমে সারাবিশ্বে প্রচার করে গেছেন মানবধর্ম। দুই বছর পর আবারও ইতিহাসের স্মরণীয় এই অনুষ্ঠান ঢাকা ও কলকাতার বাইরে সবচেয়ে বড় আয়োজনে আন্তর্জাতিক লালন ও লোক উৎসব। লালন উৎসবের দর্শক শ্রোতাদের গভীর কৃতজ্ঞতা জানান, এবারের উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা নুরুল আমিন বাবু, আহবায়ক মো: আবদুল হামিদ।
মন্তব্য করুন