বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় দাদন ব্যবসায়ীদের চাপে সাত মাস যাবত বাড়ি ছাড়া শিক্ষক এমরান

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দাদন ব্যবসায়ীদের চাপে প্রায় সাত মাস যাবত বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু এমরান হোসেন (৪৭)।
উপজেলা সদরের পশ্চিম আলোহালী গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু এমরান হোসেন ২০১৭ সালে দুপচাঁচিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অন্য শিক্ষকদের মতো ছোট্ট পরিবার নিয়ে সুখেই তার দিনগুলো কাটছিলো।
এক ছেলে এক মেয়ের বাবা আবু এমরান হোসেন ছেলের উচ্চ শিক্ষাসহ মেয়ের বিয়ে এবং নিজের চাকরির ক্ষেত্রে টাকার প্রয়োজন হলে তিনি এনজিও ছাড়াও স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুদে ঋণ গ্রহণ করেন। স্বল্প আয়ের বেতন থেকে ঋণের কিস্তিগুলো সময়মত পরিশোধ করতে পৈত্রিক জায়গা বিক্রি করে দাদন ব্যবসায়ীদের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করেন। দাদন ব্যবসায়ীদের থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ হলেও তাদের কিস্তি শেষ করতে পারেননি।
আরও আছে এনজিওর কিস্তি। দিশেহারা হয়ে পড়েন শিক্ষক আবু এমরান হোসেন। দাদন ব্যবসায়ীরা সময়ে অসময়ে তার বাড়ি ও কর্মস্থলে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিতে থাকলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। গত ডিসেম্বর মাস থেকে দাদন ব্যবসায়ীদের ভয়ে আত্মসম্মান রক্ষার্থে অনিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার মাধ্যমে তাদের কিস্তি পরিশোধ করার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুনব্যর্থ হয়ে গত ১ জানুয়ারি বিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বাড়ি ঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। আজ বুধবার (১০ জুলাই) তার গ্রামের বাড়ি পশ্চিম আলোহালী সরজমিনে গিয়ে প্রতিবেশিদের কাছ থেকে জানা গেছে, শিক্ষক আবু এমরান হোসেন দাদন ব্যবসায়ীদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
দাদন ব্যবসায়ীরা কিস্তির টাকার জন্য বাড়িতে আসতে থাকে তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার স্ত্রীও বাবার বাড়ি চলে যায়। বাড়িটি এখন জনশূন্য। তার বাড়ির সীমানা প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ তিনটি কক্ষে তালা ঝুলছে।
মন্তব্য করুন