বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেছেন, স্বাধীনতার অর্থ শুধু একটি ভূ-খণ্ড, পতাকা বা জাতীয় সংগীত নয়; স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ হলো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং মানবাধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়ন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের বেশি সময় পার হলেও বাংলাদেশের মানুষ সেই প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ এখনও পায়নি। স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ এখনও অর্জিত হয়নি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক মানিক মিয়া এভিনিউতে যুব ম্যারাথনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কামাল হোসাইন, কর্নেল আবদুল বাতেন, জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী জয়নাল আবেদিন, ড. আব্দুল মান্নান, অধ্যক্ষ আশরাফুল হক প্রমুখ।
সমাবেশে মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, “একটি আধিপত্যবাদী শক্তি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। সেই কারণেই আজও দেশের মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।
তিনি ২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতি আবারও প্রমাণ করেছে-বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে, সার্বভৌম থাকবে। তবে রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সভ্যতায় পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ পাওয়া যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের সময় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীকে অনুপস্থিত রেখে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। তার দাবি, পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে নয়, বরং ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল।
আরও পড়ুন
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত ১৬ ডিসেম্বরকে নিজেদের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে খাটো করছে, যা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার প্রসঙ্গে মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদিকে টার্গেট করে গুলি করার ঘটনা নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করে। এর আগেও হাদিকে লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, গোয়েন্দা ব্যর্থতা পর্যালোচনা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক নেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।