সীমানা নিয়ে আদালতের রায়ে ইসির ক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে: ইসি সচিব
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, সীমানা নিয়ে আদলতের রায়ে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরের সামনে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরপিও অনুযায়ী সীমানা নিয়ে আদলতে যাওয়া যায় না, এতে আদালতে সীমানা নিয়ে মামলায় ইসির ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘আদালতের রায় নিয়ে আমাদের বলার ইখতিয়ার নাই। তবে ক্ষমতা খর্ব নয়, তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে’।
তফসিলের পর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কতটা প্রস্তুত করতে পারবেন-জানতে চাইলে সচিব বলেন, এরজন্য আইন-বিধি পরিপত্র তৈরি করা আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন হবে তা আমরা করব। দলগুলোরও স্বদিচ্ছা থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস তারা সহায়তা করবে।
তফসিলের পর কর্মকর্তাদের রদবদল করবেন কি না- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘রদবদল একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি বা সম্মতি নিয়ে রদবদল করা হবে।’
গাজীপুর ও বাগেরহাট আসনের বিষয়ে আখতার আহমেদ বলেন, আদালতের আদেশ সংশোধন করা হচ্ছে। সময় হলে গেজেট প্রকাশ করা হবে। ৩০০ আসনে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা কারা হবেন- এ বিষয়ে বলেন, তফসিল ঘোষণা করার পর জানতে পারবেন কারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন।
আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচন কাজে নিয়োজিতদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান নিবন্ধন শুরু করতে পারবেন আগামী ১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর থেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারা সরাসরি নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকবেন তাদের আরও কিছুটা সময় লাগবে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের গেজেট প্রকাশ করে ইসি। এতে বাগেরহাটের চারটি থেকে একটি আসন কমানো হয়। এবং গাজীপুরে পাঁচটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়। ওই গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১ আসন; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন গঠন করা হয়। সর্বশেষ গেজেটের আগে চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট নিয়ে ছিল বাগেরহাট-১ আসন; বাগেরহাট সদর-কচুয়া নিয়ে ছিল বাগেরহাট-২ আসন; রামপাল-মোংলা নিয়ে ছিল বাগেরহাট-৩ আসন এবং মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা নিয়ে ছিল বাগেরহাট-৪ আসন।
এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টে দুটি রিট আবেদন করা হয়। মামলা দুটি করে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জেলা ট্রাক মালিক সমিতি। এতে বিবাদী করা হয় বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে।
আবেদনের শুনানি করে গত ১০ নভেম্বর বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সাল হাসান আরিফের হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের গেজেট ‘অবৈধ ঘোষণা করে বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেলে নির্বাচন কমিশন ও গাজীপুর-৬ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ আপিলের আবেদন করেন।
এছাড়া গাজীপুর–৬ আসন থেকে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হাফিজুর রহমানও আগে আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেন। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল এবং ওই আবেদনগুলো একসঙ্গে শুনানির জন্য তোলা হয়। সেই শুনানি শেষে ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের আবেদন নাকচ করে হাই কোর্টের রায় বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত। ফলে সীমানার গেজেট সংশোধন করে এখন আগের মতোই বাগেরহাটে চারটি এবং গাজীপুরে পাঁচটি আসনে যেতে হবে ইসিকে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক







