শুক্রবার থেকে কর্মবিরতি, মেট্রোরেলে যাত্রী সেবা বন্ধের ঘোষণা
স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রকাশ না হওয়ায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মীরা শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে মেট্রোরেলের সব ধরনের যাত্রী সেবা বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছে তারা।
বুধবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে কর্মচারীরা জানান, বহুদিন ধরে চাকরি-বিধিমালা চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়ে আসলেও কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করেনি। কর্মবিরতির সময় প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার পর এক দশক পেরিয়ে গেলেও প্রায় এক হাজার কর্মচারীর জন্য এখনও পূর্ণাঙ্গ সার্ভিস রুল কার্যকর হয়নি। ফলে ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট ভাতা, ওভারটাইম বা গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ মৌলিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত বলে জানানো হয়।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে উপদেষ্টা কমিটি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নিয়মাবলি চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। এরপর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করলে মার্চের মধ্যে সার্ভিস রুল সম্পন্ন করার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু ধারাবাহিক প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
কর্মীদের মতে, সার্ভিস রুলের বেশির ভাগ ধারা নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ একমত হলেও ‘বিশেষ বিধান’ শীর্ষক অংশটি প্রধান বাধা হয়ে আছে। এই বিশেষ অধ্যায়টি মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মীদের ডিএমটিসিএলে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়কে কেন্দ্র করে, যা তাদের দাবি—আইনগত ব্যাখ্যা ও আদালতের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুনকর্মচারীরা অভিযোগ করেন, পরিচালনা পর্ষদ আপত্তিকর বিধান বাদ দিতে সম্মত হলেও প্রতিষ্ঠানটির উচ্চপর্যায়ের চাপের কারণে সার্ভিস রুল প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে বিধিমালা প্রকাশ না হওয়ায় তারা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। ১১ ডিসেম্বরের মধ্যেও সমাধান না হলে ১২ ডিসেম্বর ভোর থেকে যাত্রী সেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
এই কর্মসূচির ফলে প্রতিদিন মেট্রোরেলে যাতায়াতকারী বিপুল সংখ্যক যাত্রী সমস্যায় পড়তে পারেন। তবে কর্মচারীদের বক্তব্য ন্যায্য চাকরি-বিধিমালা ছাড়া তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তাই বাধ্য হয়েই তারা কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।
তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আশ্বাস নয় সার্ভিস রুল প্রকাশ ছাড়া অন্য কোনো সমাধান গ্রহণযোগ্য নয়।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক








