অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে দিশেহারা বগুড়ার সারিয়াকান্দির মানুষ
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: সারিয়াকান্দিতে অসময়ে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পরেছে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসী। কয়েকদিনের ভাঙনে কয়েকশ’ বিঘা জমি যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। মরিচ, ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের জমি যমুনায় বিলীন হচ্ছে। এছাড়াও কয়েকদিনে বেশকিছু বসতভিটাও বিলীন হওয়াসহ অর্ধ শতাধিক পরিবার তাদের বাড়িঘর সরানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।

সাধারণত সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে বর্ষাকালে বন্যায় ব্যাপক ভাঙন হয়। তবে পানি কমার সাথে সাথে সাথে ভাঙনও কমতে থাকে। গত কয়েকমাস ধরেই অব্যাহত পানি কমায় যমুনা শুকিয়ে গেছে। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে এবার শুষ্ক মৌসুমেই যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া গ্রামে গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙন। গত কয়েকদিনের ভাঙনে এ গ্রামের প্রায় ৫০০ বিঘা ৩ ফসলি জমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। কৃষকেরা তাদের জমিতে মরিচ, ধান, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসল চাষ করেছিলেন। ফসলগুলো এখন পরিপক্ব হয়েছে।
বিশেষ করে মরিচগাছে ব্যাপক পরিমানে মরিচ ধরেছে এবং উত্তোলনের জন্য উপযুক্ত হলেও মরিচের গাছসহ জমিগুলো যমুনা নদীতে বিলীন হচ্ছে। কোথাও নদীর কিনারায় কৃষকেরা সদ্য ফুলে বের হওয়া স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান কেটে নিচ্ছেন, যা ভাঙনের কবলে পরেছে। এদিকে কোথাও গ্রামবাসী একত্র হয়ে ঘরবাড়ি ভাঙার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আরও পড়ুনকেউ খাম তুলছেন, কেউ ঘরের দড়ি খুলছেন, কয়েকজন একত্রে ঘরের চালা পরিবহন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ গ্রামের প্রায় অর্থশত পরিবার ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। তারা তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ গ্রামের তোতা ফকির (৭০) নামের একজন বৃদ্ধ বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের আতংকে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনা। ভাঙনে আমাদের মরিচ, ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল যমুনায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি, অনেক লোন নিয়ে ফসলগুলো চাষ করেছিলাম।
সংশ্লিষ্ট গ্রামের ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিনে ২ টি পরিবারের বসতভিটা যমুনায় বিলীন হয়েছে, প্রায় ৫০০ বিঘার বেশি ফসলি জমি ভেঙে গেছে এবং প্রায় অর্ধশত পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা সারিয়াকান্দি কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়া গ্রামের যমুনা নদীর ভাঙন পরিদর্শন করেছি। আপাতত সেখানে ৩৪০ মিটার এলাকায় জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলার মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন মোকাবিলায় কাজ শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো এলাকায় স্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করতে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। কাজটি পাশ হলে সেখানে ব্লকের কাজ করা হবে, এতে এ গ্রামের মানুষ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবেন।
মন্তব্য করুন


-674c8e0a316a3_medium_1765031829.jpg)


_medium_1765030332.jpg)

