স্পোর্টস ডেস্কঃ বাংলাদেশ নারী ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল মেয়েরা। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজারবাইজানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে আশার আলো দেখালেও শেষ মুহূর্তের গোলে শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে পিটার বাটলারের শিষ্যদের।
ম্যাচের শুরু থেকেই শক্তিশালী আজারবাইজানের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করে বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমারা একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণের পরীক্ষা নেন। দুই দলই কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও গোল আসছিল না। ২০ মিনিটে প্রথম গোল পায় আজারবাইজান। বক্সের বাঁ দিক থেকে মানিয়া ইসরার ক্রসে হেডে বল জালে জড়ান অধিনায়ক জাফারজাদা সেভিনজ।
গোল উদযাপনও ছিল আবেগঘন। ডাগআউট থেকে দেওয়া সাদা টি শার্ট হাতে নিয়েই তিনি উদযাপন করেন। টি শার্টে লেখা ছিল, ‘মমস নেভার ডাই, ইউ আর অলওয়েজ ইন মাই হার্ট’। চোখে জল নিয়ে গোল উৎসর্গ করলেন প্রয়াত মাকে।
৩৩ মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে গতিতে উঠে ঋতুপর্ণা স্টাইলিশ থ্রু বল বাড়ান মনিকার উদ্দেশ্যে। কিন্তু একা অবস্থায়ও গোলরক্ষক শরিফা আয়তাজের বাধা ডিঙাতে পারেননি তিনি। এক মিনিটের মধ্যেই কর্নার থেকে গোল পায় বাংলাদেশ। স্বপ্না রানীর শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বলে মারিয়া মান্ডার টপ কর্নারে পাঠানো শট জালে জড়ায়। গ্যালারিতে তখন উচ্ছ্বাসের ঢেউ।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচটি হয়ে ওঠে আরও লড়াই–লড়াই। গোল শোধে মরিয়া আজারবাইজান লাগাতার আক্রমণ করতে থাকে। বাংলাদেশও চেষ্টা করে লিড নেওয়ার। ৬৮ মিনিটে আক্রমণ বাড়াতে তহুরা খাতুনের জায়গায় মাঠে আসেন উমেহলা মারমা, আর শামসুন্নাহার জুনিয়রের জায়গায় নামানো হয় মোসাম্মত সুলতানাকে।
রক্ষণভাগ চাপ সামলালেও ৮৩ মিনিটে আর পারলেন না রুপনা চাকমা। ডিফেন্সের ভুলে ইয়েলিজের বাড়ানো উঁচু বলে ফাঁকায় বল পান মানিয়া ইসারা। তার ডান পায়ের শট বাংলাদেশের জালে গিয়ে লেগে দেয় লিড আজারবাইজানের। গোল উদযাপন করেন রোনালদোর বিখ্যাত ‘সিইউ’ ভঙ্গিতে।
শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। তবু এই ম্যাচে ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা এএফসি এশিয়ান কাপ মিশনে বড় কাজে লাগবে বলে মনে করছেন ফুটবলপ্রেমীরা। ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও প্রস্তুত হয়ে ফিরতে পারবে দল, এমনটাই আশা সবার।