সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে পর্যটকবাহী তিন জাহাজ
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকায় অবশেষে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৭টায় পর্যটকবোঝাই তিনটি জাহাজ কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এবার সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের মানতে হবে ১২টি সরকারি নির্দেশনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের চাপ কমাতে গত বছর থেকে সরকারিভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সেন্টমার্টিন। কিন্তু, নভেম্বর মাসে রাত্রিযাপনের সুযোগ না থাকায় পর্যটকরা সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিরুৎসাহিত হন। এ কারণে কোনও পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। কিন্তু, ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকায় ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচলের ঘোষণা দেন জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ। সকাল ৭টা থেকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করবে ৪টি পর্যটকবাহী জাহাজ। অবশ্য, এসব জাহাজ দুই হাজারের অধিক পর্যটক বহন করতে পারবে না।
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ইচ্ছুক পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট অবৈধ গণ্য হবে। প্রথম দিনের যাত্রায় তিনটি জাহাজের ১২শ টিকিট আগেই বিক্রি হয়েছে বলে জাহাজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের প্রথম যাত্রার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর সব প্রস্তুতি ভালোভাবে নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের ভ্রমণ সুন্দর ও নিরাপদ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেন্টমার্টিনে যেতে পর্যটকদের আগ্রহ সন্তোষজনক। তবে পরবর্তী মৌসুম থেকে অন্তত ৪ মাস যদি রাত্রিযাপনের সুযোগ মেলে তাহলে পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা লাভবান হবেন।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সেন্টমার্টিন আমাদের সম্পদ, সরকারের আরোপিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলা উচিত। আশা করছি, দ্বীপের জীববৈচিত্র রক্ষায় পর্যটকসহ সংশ্লিষ্টরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে। তা না হলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটক সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল-ফুল সংগ্রহ-বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রমে কঠোর বিধিনিষেধ মানতে হবে। এছাড়াও সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইক বা যেকোনও মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পাশাপাশি পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, মিনিপ্যাক সাবান-শ্যাম্পু, ছোট প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি) নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক





