প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৩৩ বিকাল
চট্টগ্রামে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সাবেক সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। মামলায় এ দম্পতির বিরুদ্ধে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬৬১ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে দুদকের কাছে ১ কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক মো. সায়েদ আলম বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। একটি মামলায় আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য আনা হয়।
অন্য মামলায় আসলাম সুলতানার বিরুদ্ধে ৬৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
দুদকের মামলার নথিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর কমিশনের আদেশে আহসান হাবিবকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরের মাসে ১০ ডিসেম্বর তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেন। তাতে তিনি ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর এবং ৫০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন।
কিন্তু দুদকের যাচাইয়ে দেখা যায়, আহসান হাবিবের নামে ও দখলে মোট ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৯৬ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক জমা, নগদ অর্থসহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, সম্পদ বিবরণী দাখিলের পর তার নামে ১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, সোনালী ব্যাংকে ৩৩ লাখ টাকার এফডিআর, ৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৯৭ টাকার মেডিকেয়ার ডিপোজিট স্কিম এবং তার মেয়ের নামে ৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। দুদকের হিসাবে আহসান হাবিবের বৈধ আয়ের উৎসে পাওয়া গেছে ৯০ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮৫ টাকা। সেই হিসাবে তার ৫৯ লাখ টাকার বেশি সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, আসমা সুলতানা নিজ নামে ২০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। তবে অস্থাবর কোন সম্পদ নেই বলে দুদককে জানান। কিন্তু দুদক যাচাইকালে তার নামে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পান। এছাড়া সম্পদ যাচাইকালে তার নামে ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ৭৫০ টাকার মোট সম্পদ পাওয়া গেলেও তার আয়ের কোন উৎসই পায়নি দুদক। এ সংক্রান্ত কোন রেকর্ডপত্রও পাওয়া যায়নি।
দুদক জানায়, মূলত স্বামী আহসান হাবিবের অর্জিত অবৈধ অর্থে স্ত্রী আসমা সুলতানার নামে এসব সম্পদ অর্জন করা হয়েছে। আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমস বিভাগে ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগ দেন। ২০১২ সালে সহকারী কমিশনার পদে পদোন্নতি পান এবং ২০১৪ সালের ৬ জুলাই অবসর গ্রহণ করেন।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক মো. সুবেল আহমদ বলেন, কমিশনের নির্দেশে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অন্য কারও সম্পৃক্ততা পেয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন

নিউজ ডেস্ক






