ভিডিও শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫৬ সকাল

জোহরান মামদানি, নিউ ইয়র্ক শহরের প্রথম ‘নির্বাচিত’ মুসলিম মেয়র

জোহরান মামদানি, নিউ ইয়র্ক শহরের প্রথম নির্বাচিত মুসলিম মেয়র, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জোহরান মামদানি। স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমোকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েন ডেমোক্র্যাট পার্টি সমর্থিত এই রাজনীতিক।

নির্বাচনি ফলাফলে দেখা গেছে, ৩৪ বছর বয়সী মামদানি পেয়েছেন ১০ লাখ ১৮ হাজার ১৯০ ভোট, যা মোট ভোটের ৫০.৩ শতাংশ। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুওমো পেয়েছেন ৮ লাখ ৪১ হাজার ৪৭৬ ভোট, যা মোট ভোটের ৪১.৬ শতাংশ। অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টি সমর্থিত কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ ভোট, যা মোট ভোটের ৭.১ শতাংশ।স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৮টা)। পুরো বিশ্বের নজর ছিল এই ভোটের দিকে। ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পরপরই বার্তা সংস্থা এপি মামদানির বিজয়ের খবর নিশ্চিত করে। উত্তেজনাপূর্ণ এ নির্বাচনে মামদানির জয় ইতিহাসের নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।

নিউ ইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশন জানিয়েছে, ১৯৮৯ সালের পর এবারই প্রথম শহরটিতে ভোটার উপস্থিতি ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে বোর্ড এক বিবৃতিতে জানায়, এবার ভোটার উপস্থিতির হার ঐতিহাসিক মাত্রায় পৌঁছেছে।

৮৪ লাখের বেশি মানুষের এই শহর অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বৈশ্বিক শক্তিকেন্দ্র। সেই শহরের প্রথম মুসলিম, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া নেতা হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখালেন মামদানি।বহুধর্মী ও বহুজাতির এই মহানগরের ভোটাররা মামদানির জয়কে ঐতিহাসিক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন। তবে তার নিবেদিত সমর্থকরা বলছেন, এটি কেবল ধর্ম বা জাতিগত পরিচয়ের জয় নয়, এটি জীবনের ব্যয় সামাল দেওয়ার বাস্তব সমস্যায় তার তীক্ষ্ণ ও স্পষ্ট অবস্থানের প্রতিফলন।

আরও পড়ুন

এই নির্বাচন ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশক হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো অনেকের কাছে পুরোনো ধনবান দাতানির্ভর রাজনীতির প্রতীক। আর নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া মামদানি দলটির জন্য নতুন এক পথের সম্ভাবনা তৈরি করেছেন।এনবিসি নিউজের এক্সিট পোল অনুযায়ী, মামদানি নিউ ইয়র্কের প্রায় সব জাতিগত গোষ্ঠীর ভোট পেয়েছেন—শ্বেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো, এশীয় ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ভোটারদের বড় অংশই তাকে বেছে নিয়েছেন। ৪৫ বছরের নিচের ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ছিল বিপুল; কুওমোর চেয়ে ৪৩ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন তিনি। অন্যদিকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের মধ্যে কুওমো ১০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।

শিক্ষাগত পার্থক্যও ভোটের ফলাফলে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে এক্সিট পোল জানায়। এ ছাড়া গত ১০ বছরে নিউ ইয়র্কে বসতি স্থাপন করা নতুন বাসিন্দা ও জন্মসূত্রে নিউ ইয়র্কে থাকা ভোটারদের মধ্যেও স্পষ্ট বিভাজন দেখা গেছে।

তবে মামদানির ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নির্বাচনজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তার মুসলিম পরিচয় ও ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিরূপ প্রচারণা চললেও শেষ পর্যন্ত ভোটাররা তাকেই সমর্থন দেন। এক্সিট পোল অনুযায়ী, ইহুদি ভোটারদের মধ্যে কুওমো এগিয়ে ছিলেন ৬০ শতাংশ ভোটে, যেখানে মামদানি পান ৩১ শতাংশ ভোট। সূত্র : আলজাজিরা, এনবিসি নিউজ

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসি শতভাগ প্রস্তুত : ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগেই সংসদ নির্বাচন সম্ভব

সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো জাতিসংঘ

আজও ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

গঙ্গাচড়ায় বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার

বগুড়ার কাহালুতে সৎ ছেলের হাতে বাবা খুন

নওগাঁর রাণীনগর রেলগেটে যানজট  নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন