আইসল্যান্ডে প্রথমবারের মতো মশা শনাক্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশার সন্ধান মিলেছে। দেশটি এখন কীটপতঙ্গের বসবাসের জন্য আরও উপযোগী হয়ে উঠছে বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, চলতি মাস পর্যন্ত বিশ্বের কয়েকটি মশাবিহীন স্থানের একটি ছিল আইসল্যান্ড। আর অন্য স্থানটি হলো বরফাচ্ছাদিত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো আইসল্যান্ডে মশা শনাক্ত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আগেই ধারণা করেছিলেন, অদূর ভবিষ্যতে আইসল্যান্ডে মশা নিজেকে টিকিয়ে রাখার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। কারণ দেশটিতে জলাভূমি ও পুকুরের মতো মশার জন্য উপযুক্ত প্রচুর প্রজননস্থল রয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেক প্রজাতিই সেখানে টিকে থাকতে পারে না।
দেশটিতে বর্তমানে উষ্ণতা বাড়ছে। এই উষ্ণতা পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের বাকি অংশের তুলনায় চার গুণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে হিমবাহ গলছে এবং দক্ষিণের উষ্ণ পানি থেকে আসা মাছও এখন আইসল্যান্ডের উপকূলে ধরা পড়ছে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নতুন নতুন মশার প্রজাতি দেখা যাচ্ছে। চলতি বছর যুক্তরাজ্যে এডিশ মশার ডিম পাওয়া গেছে। আর দেশটির কেন্ট এলাকায় দেখা মিলেছে এশিয়ান টাইগার মশার। এসব প্রজাতি আক্রমণাত্মক এবং ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের মতো উষ্ণমণ্ডলীয় রোগ ছড়াতে পারে।
আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল সায়েন্স ইনস্টিটিউটের কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেসন দেশটিতে মশা শনাক্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিজ্ঞানীদের পাঠানো নমুনা নিজেই পরীক্ষা করে মশাগুলোর প্রজাতি শনাক্ত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনকীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেসন বলেন, কিডাফেল, কিয়স এলাকায় কুলিসেটা অ্যানুলাটা (Culiseta annulata) প্রজাতির তিনটি মশা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ। সবক’টি মশা মথ ধরার জন্য ব্যবহৃত ‘ওয়াইন ফাঁদ’ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এই প্রজাতির মশা ঠান্ডা সহনশীল এবং শীতকালে ঘরের বেসমেন্ট ও খামারঘরে আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকতে পারে।
বিজর্ন হ্যাল্টাসন নামের এক ব্যক্তি প্রথম মশাগুলো দেখতে পান এবং ‘ইনসেক্টস ইন আইসল্যান্ড’ নামের ফেসবুক গ্রুপে বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় লাল ওয়াইন ফাঁদে এক অদ্ভুত প্রজাতির মশা দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গেই সন্দেহ জাগে এবং দ্রুত সেটি ধরে ফেলি।পরে দেখি এটি একটি স্ত্রী মশা।
তিনি আরও দুটি মশা ধরেন এবং সেগুলো আইসল্যান্ডের বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠান। পরে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এই মশা শনাক্ত করা হয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
মন্তব্য করুন