লক্ষ্মীপুরের যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আরিফ হোসেন (৪০) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি- পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেছেন নিহতের বোন নাসরিন আক্তার।
এদিকে নিহতের স্ত্রী নাসিমা আক্তার বলেন, ঘটনার রাতে আরিফের মোবাইলে কল আসে। কিন্তু তিনি বের হননি। পরে কে যেন বাহির থেকে তাকে ডাক দিয়েছে। তখন তিনি বের হয়ে যান, কিন্তু রাতে ফেরেননি। সকালে স্থানীয়রা বাড়ির অদূরে একটি গভীর নলকূপের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহতের মেয়ে মুন্নি আক্তার বলেন, আমার বাবার মাথায়, ডান হাতে আঘাত ছিল। তার পাও ভাঙা ছিল। কে যেন বাবাকে ডেকে নিয়েছে।
নিহত আরিফ রায়পুর পৌরসভার গোলাম রহমান সর্দার বাড়ির মানিক মিয়ার ছেলে ও পেশায় কাঠমিস্ত্রি।
নিহতের ভাই শরীফুল ইসলাম ও বোন নাসরিন আক্তার জানান, বাড়ির সামনে কবরস্থানের জমি নিয়ে রায়পুর পৌরসভার সাবেক নারী কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে ১০ অক্টোবর লিলির নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে শরীফের মাথায় কাটা জখম হয়। লিলিরাই আবার থানায় মামলা করে। ওই মামলায় জামিনে আছেন। এরপর তারা প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। লিলিরাই পরিকল্পিতভাবে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে আরিফকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। পরদিন রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বিকেলে নাসরিন বাদী হয়ে রায়পুর থানা মামলা করেন।
নাসরিন আক্তার বলেন, আমার ভাই শরীফের মাথায় রক্তাক্ত জখম করেছে লিলি ও মামুনরা। এরপর তারা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে। পরে জামিন পাওয়ায় তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাদের হুমকি-ধমকিও দিয়েছে। তারাই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাই আরিফকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুনস্থানীয়রা জানান, প্রতিবশী লিলিদের সঙ্গে জমি নিয়ে আরিফদের বিরোধ রয়েছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আরিফের মৃত্যুটি রহস্যজনক। দ্রুত সময়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন প্রয়োজন।
বক্তব্য জানতে সাবেক কাউন্সিলর শামছুন্নাহার লিলির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরুপ পাল বলেন, মরদেহের ডান পায়ের হাড়ের একাধিক অংশ ভাঙা ছিল। তবে পায়ে দৃশ্যমান কোনাআঘাত দেখা যায়নি। কপালের ডান পাশে চোখের কাছে থেঁতলানো জখম ছিল। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
রায়পুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন