কমছে রেজিস্ট্রেশন
রংপুরে জমি বিক্রিতে নতুন কর বিপাকে ক্রেতা-বিক্রেতা

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জমি বিক্রির ক্ষেত্রে উৎসে কর হিসেবে এখন থেকে প্রতি শতাংশে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন এ সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। গত ২৪ জুন প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে সংশোধিত উৎসে কর বিধিমালা কার্যকর হয় এবং ১ জুলাই থেকে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়।
নিয়ম অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জমি বিক্রির সময় বিক্রেতাকে জমির মোট দামের ৩ শতাংশ বা প্রতি শতাংশে ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা কর দিতে হবে। দুইয়ের মধ্যে যেটি বেশি হবে, সেটিই প্রযোজ্য হবে। এ কারণে রংপুরে জমি কেনাবেচায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।
মাস্টারপাড়া এলাকার রুহুল আমীন জানান, ছেলে বিদেশে পাঠাতে জমি বিক্রির বায়না করেছিলেন। কিন্তু শতকপ্রতি ২৫ হাজার টাকা কর দেওয়ার কারণে এখন বিপাকে পড়েছেন। বীরচরণ এলাকার তালাত বলেন, এলাকায় প্রতি শতক জমি ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এর মধ্যে যদি ২৫ হাজার টাকা কর দিতে হয়, তাহলে জমির প্রকৃত দাম পড়ে যাবে অর্ধেকের মতো। নাছনিয়া এলাকার কৃষক আবেদ আলী জানান, রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে করের বিষয়টি শুনে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিল করে ফিরে এসেছেন তিনি।
রংপুর দলিল লেখক সমিতির সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, রংপুর সিটির অধিকাংশ অঞ্চল কৃষি এলাকা, যেখানে জমির দাম তুলনামূলক কম। অথচ কর নির্ধারণ করা হয়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে রেজিস্ট্রেশন অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমানে বেশিরভাগ রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে বায়না, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা দানপত্র।
আরও পড়ুনরংপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ বলেন, কর হার বেড়েছে ঠিকই, তবে জমি বিক্রি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। গত দুই মাসে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
জমি কেনাবেচার ব্যবসায়ী ইমরুল হাসান রেভিন জানান, রংপুরের মতো অনুন্নত এলাকায় ঢাকার সমান কর একেবারেই অযৌক্তিক। আগে মাসে ৩-৪টি জমি কেনাবেচা হতো, এখন পুরোপুরি বন্ধ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক ও সরকার নিজেও।
মন্তব্য করুন