ভিডিও শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

অভিভাবকহীন রাজশাহী পরিচ্ছন্ন  নগরীর তকমা হারাচ্ছে

অভিভাবকহীন রাজশাহী পরিচ্ছন্ন  নগরীর তকমা হারাচ্ছে

রাজশাহী প্রতিনিধি: দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে একসময় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিল রাজশাহী মহানগরী। কিন্তু অভিভাবকহীন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন(রাসিক) এখন নগরবাসীর প্রয়োজনীয় সেবাও নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে। বেদখল হয়ে যাচ্ছে নগরীর ছোট-বড় রাস্তা, গলিপথ থেকে হাঁটাপথ সব জায়গা। নালা-নর্দমা, ড্রেন উপচে ময়লা পানি ভাসাচ্ছে সড়ক ও বাসা-বাড়ি। যেখানে সেখানে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মহল্লাবাসী। তার ওপর বেড়ে চলা যানজটে প্রতিনিয়তই নাকাল নগরীর মানুষ। পরিচ্ছন্ন নগরীর এমন বিবর্ণ চেহারায় ক্ষুব্ধ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগীরা জানান, সিটি কর্পোরেশনে মেয়র ও কাউন্সিলর নেই এক বছরের বেশি সময় ধরে। বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা মাসে একবারও কাউন্সিলর অফিসে যান না। নগরবাসীর কোনো সমস্যা সরাসরি শোনেন না। নগরীর কোথায় কী সমস্যা, তা জানারও চেষ্টা করছেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব সরকারি কর্মকর্তা। 
সরেজমিনে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ভদ্রা মোড়ের টাইলস লাগানো পুরো ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে ফলের দোকান। এসব দোকানের ফলসম্ভার সাজিয়ে রাখা হচ্ছে মূল সড়কের আরও কিছু অংশ দখল করে। এতে পথচারীরা পথ চলতে গিয়ে নিয়মিত বিড়ম্বনায় পড়ছেন। এর পূর্বাংশের পুরো ফুটপাত দখল করে বানানো হয়েছে আন্তঃজেলা বাস সার্ভিসের কাউন্টার। ভদ্রা মোড় থেকে রাজশাহী রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার ফুটপাতের পুরোটাই ভাঙারি ব্যবসায়ীদের দখলে। 
এদিকে সিরোইল বাস টার্মিনালের সামনের বড় সড়কটির ওপর সারিবদ্ধভাবে বাস রাখা হচ্ছে। এতে সড়কের অর্ধেকের বেশি জায়গা ব্লক করে রাখা হলেও সিটি কর্পোরেশন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অন্যদিকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজারের এক ইঞ্চি ফুটপাতও দখলের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। জিরো পয়েন্ট থেকে সোনাদিঘির মোড় ছাড়াও মালোপাড়া থেকে সোনাদিঘি পর্যন্ত ফুটপাতের ওপর বসছে শত শত দোকান। অন্যদিকে নগরীর সিটি বাইপাসের বহরমপুর, হড়গ্রাম, বুলনপুর, বড়কুঠি, শালবাগান, সাগরপাড়া, লক্ষ্মীপুর, উপশহর, সপুরা, তেরখাদিয়া প্রভৃতি এলাকায় মোড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে থাকছে কয়েকদিন ধরে।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উচ্ছেদের আগে মাইকিং করে ফুটপাত থেকে দোকানপাট সরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি। কেউ নিজেরা সরিয়ে না নিলে উচ্ছেদ অভিযান করছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রেলগেট বহরমপুর মোড় পর্যন্ত পুরো গ্রেটার রোডে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানজট থাকছে। ঘোষপাড়া মোড় থেকে লক্ষ্মীপুর মোড় হয়ে ঝাউতলা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী যানজটে আটকা থাকছে মানুষ। এ এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ রয়েছে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল। বিশেষ করে মেডিকেল হাসপাতালের সামনের সড়কের তিন ভাগের দুই ভাগই ভ্রাম্যমাণ দোকান আর প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সের দখলে। 
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, নগরীতে প্রয়োজনের তুলনায় দশগুণ বেশি অটোরিকশা চলাচল করছে। যানজট হচ্ছে মূলত অটোরিকশা আর পুরো ফুটপাত অবৈধ দখলের কারণে। এছাড়াও নগরীতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান আগে যেভাবে চলত, এখন তা গতিহীন হয়ে পড়েছে।
রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, যানজট দেখার বিষয়টি নগর পুলিশের ওপর ন্যস্ত। ময়লা ও বর্জ্য অপসারণের কাজগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবেই হচ্ছে। কোথাও বর্জ্য পড়ে থাকলে এবং আমরা খবর পেলে তাৎক্ষণিক অপসারণের উদ্যোগ নিয়ে থাকি। 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজীবন সম্মাননা পেলেন দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক

স্বর্ণের ভরি দুই লাখ ছুঁইছুঁই

দেশ বিদেশ থেকে ‘শেষের গল্প’তে দীপার অভিনয়ের প্রশংসায় দর্শক

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা

মা ইলিশ রক্ষায় ১৭টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন নৌবাহিনীর

সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ৯৫৬