ভিডিও সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরী করে ভাগ্য বদল করেছেন জয়পুরহাটের বেলাল

ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরী করে ভাগ্য বদল করেছেন জয়পুরহাটের বেলাল। ছবি : দৈনিক করতোয়া

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : ডিমের পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন জয়পুরহাটের উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লা নামের। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগী ও গবাদি পশুর খাবারের ক্যালসিয়াম এবং জমির মূল্যবান খনিজ পদার্থ হিসেবে। এতে ভাগ্য বদলেছে বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন জেলার কৃষি ও পোল্ট্রি সেক্টরের কর্মকর্তাগণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জয়পুরহাটের বেলতলী গ্রামের বেলাল মোল্লা ২০১৭ সাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকার পোল্ট্রি ও হ্যাচারি মালিকদের কাছ থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করে বগুড়ায় জৈব সার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বিনিময়ে আবর্জনা অপসারণে বেলাল মোল্লাকে পারিশ্রমিক হিসেবে টাকা দিতেন হ্যাচারি মালিকরা। পাশাপাশি তিনি লিটারের ব্যবসা করতেন। পোল্ট্রি কারখানা থেকে লিটার কিনে তিনি বিক্রি করতেন।

এক সময় তার কৌতুহল জাগে ডিমের খোসা দিয়ে বগুড়ার ব্যবসায়ীরা কি করেন তা জানার। পরে তিনি জানতে পারেন ডিমের খোসা জৈব সার হিসেবে বিক্রি করেন বগুড়ার ব্যবসায়ীরা। ডিমের খোসার পাউডার যে মাটি উর্বরের পাশাপাশি মাছ, পোল্ট্রি ও পশুর খাবারে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয় সেটা জানার পর ডিমের খোসার পাউডার তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন বেলাল।

স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় ২০২৪ সালে বেলাল জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী এলাকায় তার নিজ জায়গায় স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। যেখানে প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছেন বেলাল।

বিনামূল্যে ডিমের খোসা এনে পরিস্কার করে নিজের মেশিনে চূর্ণ করে ৫০ কেজির পাউডার বেলাল বিক্রি করছেন ৭৫০ টাকায়। তার এ কারখানায় সহযোগিতার জন্য তিনি নিয়োগ করেছেন ৫জন শ্রমিক। শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও অন্যান্য খরচের পরও মাসে ডিমের খোসার পাউডার বিক্রি করে বেলালের এখন আয় হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। জমির উর্বরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মৎস্য ও পোল্ট্রী খাতে সহজ লভ্যে ক্যালসিয়ামের অভাব দুর হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বাড়ছে ডিমের পাউডারের। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছেন বেলাল মোল্লা।

আরও পড়ুন

ক্ষেতলাল উপজেলার বেলগাড়ি গ্রামের মাছ চাষী আব্দুল আলিম বলেন, ‘মাছের বৃদ্ধি হয় ডিমের খোসার পাউডার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে। জেলা মৎস্য অফিস থেকে এমন পরামর্শ পেয়ে আমি পুকুরে নিয়মিত ডিমের খোসার পাউডার মিশ্রিত খাদ্য পুকুরে সরবরাহ করে ভালো ফলাফল পেয়েছি’।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার রাফসিয়া জাহান বলেন, ডিমের খোসা যত্রতত্র ফেলে না দিয়ে চূর্ণ করে কৃষি কাজে ব্যবহার করেন তাহলে ওইসব খনিজ পদার্থের অভাব অল্প খরচে খুব সহজে মেটানো সম্ভব। এতে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা বাড়বে, অন্যদিকে চাষাবাদে লাভও বেশি হবে।

জয়পুরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মহির উদ্দিন বলেন, ডিমের খোসা থেকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ গবাদিপশুর যে খাদ্যের প্রয়োজন হয় সেটা তৈরি করা যায়। অনেক সময় দেশি মুরগীর ডিমের খোসা পাতলা হয়। সেই ক্ষেত্রে ডিমের খোসা যদি ওই মুরগীকে খাবারের সাথে মিশে দেওয়া হয় তাহলে দুই থেকে তিন দিন পরেই দেখা যাবে ডিমের খোসা শক্ত হয়েছে। অর্থাৎ ডিমের খোসা তৈরির জন্য যে খাদ্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়, সেই ক্যালসিয়ামের সোর্স হিসেবে পশু ও মুরগীর খাদ্যে ডিমের খোসা ব্যবহার হতে পারে। ডিমের খোসা খুবই মূল্যবান উপাদান।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দিনাজপুরে নাইস প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষর

বগুড়ার গাবতলীতে নদীতে ডুবে বৃদ্ধ নিখোঁজ

ভাইরাল ‘পিছে তো দেখো’ ভিডিওতে থাকা আহমদের ছোট ভাই মারা গেছে

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের অনুরোধে ইলিশ পাঠানো হয়েছে কোন চাপে নয় : মৎস্য প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বগুড়া-১ আসনে ১২৫ কেন্দ্রে ভোট দিবেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৬২ জন

বগুড়ার সান্তাহারে ভাঙা রেললাইনে কম্বল গুঁজে ১৮ ঘন্টা ট্রেন চলাচল