রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে যোগ দিলেন বাবুল হোসাইন

অভি মঈনুদ্দীন ঃ বাবুল হোসাইন, একাধারে একজন শিক্ষক, সঙ্গীত প্রশিক্ষক ও একজন গুনী সঙ্গীতশিল্পী। বিশেষত ফোক গানে তিনি অনবদ্য একজন শিল্পী।
এরইমধ্যে তিনি একজন প্রভাষক হিসেবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেয়ায় বিশেষত বাবুলের বাবা মা, স্ত্রী’সহ পরিবারের অন্যান্য সবাই ভীষণ খুশী। বাবুল যে চৌহদ্দিতে বেড়ে উঠেছেন, বড় হয়েছেন সবারই একটা স্বপ্ন ছিলো যে বাবুল একদিন অনেক বড় হবেন। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেবার পর যেন সেই স্বপ্ন অনেকটাই আজ পরিপূর্ণ। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের অতি সাধারণ এক পরিবারের সন্তান বাবুল। তার বাবা আলতাব আলী আর মা সুফিয়া খাতুন।
ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিলো বাবুলের প্রবল আগ্রহ। হালুয়াঘাট উপজেলার মাছাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধারা উচ্চবিদ্যালয়, ধারা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে পড়াশুনা শেষে তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীতে অনার্স (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) এবং মাস্টার্সে নজরুল সঙ্গীত বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। অনার্সে কলা অনুষদ বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ মার্কস পাওয়ায় ইউজিসি (বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন) কর্তৃক প্রবর্তিত ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণ পদক’-এ ভূষিত হন বাবুল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে বাবুল অনার্সের ফলাফলের ভিত্তিতেই ‘রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক’-এ ভূষিত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেবার আগে বাবুল দীর্ঘ প্রায় সাত বছর রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত ‘মিরপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ’-এ সঙ্গীত বিভাগে শিক্ষকতা করেন। তারও আগে তিনি প্রথম রাজধানীর ‘আলোকিত শিশু ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাণ্ডার্ড স্কুল’-এ এবং পরবর্তীতে ‘দিল্লী পাবলিক স্কুল (ডিপিএস)-এ শিক্ষকতা করেন।
আরও পড়ুনমূলত গোলাম সোহরাব দোদুল পরিচালিত তারিন ও মনোজ প্রামাণিক অভিনীত একটি নাটকের মিউজিকের কাজ করতেই ঢাকায় এসেছিলেন বাবুল। ঘটনাক্রমেই তিনি শিক্ষকতা পেশার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। আজ থেকে এক দশকেরও বেশি সময় আগে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সাংষ্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বাবুল হোসেন নজরুল সঙ্গীত ও লোক সঙ্গীতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান প্রসঙ্গে বাবুল হোসাইন বলেন,‘ শুরুতেই বলি, সত্যিই খুউব খারাপ লাগছে, কষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় সাতটা বছর মিরপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল কলেজে শিক্ষকতা করেছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, সহকর্মীদের সঙ্গে এক অন্যলকম মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। এই কষ্টটা আসলেই ব্যাখা করা যায়না। তারপরও দেশ ও সমাজের জন্য এবং সংস্কৃতিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়া। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যাণ্ড কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল সাব্বির স্যার ও সোলায়মান স্যার। কৃতজ্ঞতা জানাই বর্তমান প্রিন্সিপাল ফারজানা শাকিল ম্যাডামকেও। আমি আমার উপরি অর্পিত দায়িত্ব ¦ এই কলেজে যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়েও তা শতভাগ পালন করারই চেষ্টা থাকবে। মিরপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ আমাকে সর্বোচ্চ সম্মানের সাথে যে আবেগঘন বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে তা আমি আজীবন শ্রদ্ধার সাথে মনে রাখবো। সবাই দোয়া করবেন আমার মেয়ে ফাতিমা’সহ পরিবারের সবার জন্য।’
বাবুল হোসাইন জানান, শিগরিই তিনি অভি মঈনুদ্দীনের কথা ও সুরে ‘রয়েছো জীবনজুড়ে’ গানটি প্রকাশ করবেন।
মন্তব্য করুন