ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর সেই পাহাড়িয়াদের ‘উচ্ছেদের’ অভিযোগ মনগড়া

রাজশাহীর সেই পাহাড়িয়াদের ‘উচ্ছেদের’ অভিযোগ মনগড়া

রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম নতুনপাড়া এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাহাড়িয়া সম্প্রদায়কে কথিত উচ্ছেদের ঘটনা নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বোয়ালিয়ার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাজ্জাদ আলীই জমির প্রকৃত মালিক। তার বিরুদ্ধে জোর করে পাহাড়িয়া সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ, বল প্রয়োগ বা ভয়-ভীতি প্রদর্শনেরও প্রমাণ মেলেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

অপরদিকে পাহাড়িয়া সম্প্রদায় তাদের স্বপক্ষে জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তবে সাজ্জাদ আলী জমির রেকর্ড, দলিল, নামজারি ও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখিয়েছেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমাও দিয়েছেন বোয়ালিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম নতুনপাড়া এলাকায় একখণ্ড জমির ওপর স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে থেকেই বসবাস করছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাহাড়িয়া সম্প্রদায়। প্রথমে মাত্র ছয়টি পরিবার বসবসা শুরু করে। পরে বাড়তে বাড়তে সেখানে এখন অন্তত ১৬টি পরিবার অস্থীয় ঘরবাড়ি করে বসবাস করছে। কিন্তু জমির মালিক তারা নন। অন্যের জমিতে বাস করে আসছেন। তাদের বাড়িঘেঁষা বাকি জমির মালিক সাজ্জাদ আলী নামের এক ব্যক্তি।

তবে সাজ্জাদ আলীর দাবি, পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের বসতির ৩৭ শতক জায়গাও তার কেনা সম্পত্তি। কিন্তু সম্প্রতি ওই জায়গা ফাঁকা করে দিতে পাহাড়িয়াদের অনুরোধ জানান সাজ্জাদ। তারা অন্যত্র চলে যেতে রাজিও হন। তবে সহায়-সম্বল না থাকায় মানবিক কারণে বসবাসের জন্য তারা সাজ্জাদ আলীর কাছে পাঁচ কাঠা জমি দাবি করেন। কিন্তু সাজ্জাদ আলী জমি নয়, পুনর্বাসনের জন্য তাদের টাকা দিতে রাজি হন। এসময় পাহাড়িয়া সম্প্রদায় সম্মিলিতভাবে ৫০ লাখ টাকা সহায়তা দাবি করে।

আরও পড়ুন

পরে উভয়পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে তিন মাসের মধ্যে জমি ছেড়ে দিতে রাজি হন তারা। অন্যদিকে, পুনর্বাসনের জন্য পরিবারগুলো মোট ৩০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন সাজ্জাদ। সাজ্জাদ আলীর কাছ থেকে পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের কে কত লাখ টাকা করে নিয়েছেন স্ট্যাম্পে প্রত্যেকের সই-টিপসহি রয়েছে। রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, আমরা সব ধরনের কাগজপত্র পর্যালোচনা করেছি।

তদন্তে নিশ্চিত হয়েছি, জমিটির মালিকানা আইনগতভাবে সাজ্জাদ আলীর। জমির প্রকৃত মালিক সাজ্জাদ আলী বলেন, আমি বৈধভাবে জমি কিনেছি এবং বহু বছর ধরে এর দখলে আছি। পাহাড়িয়ারা আগে থেকেই সেখানে ছিলেন। আমারই নানা কাজ করেন তারা। মানবিক কারণে এতদিন উচ্ছেদ করিনি। তাদের আমি কারও কারও বাড়িও তৈরি করে দিয়েছি। তারা এখন চলে যাবেন। ঠিক এইসময় একটি পক্ষ এটিকে ‘সংখ্যালঘু ইস্যু’ বানানোর অপচেষ্টা করছে।

পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারকে ‘খাসি খাইয়ে’ ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে এমন খবর কয়েকটি গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাকে প্রচার করা হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয় কয়েকটি এনজিও ছাড়াও ঢাকা থেকে মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা এসে নানা তৎপরতা শুরু করেন। প্রচার করা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় কথিত এই উচ্ছেদের ঘটনা তদন্তে নামে বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিস।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার শিবগঞ্জের ময়দানহাট্টা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা

সোনার রেকর্ড দাম, ভরি-১ লাখ ৮২ হাজার, সাধারণ মানুষের সোনা কেনার সীমাবদ্ধতা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্র মামলায় যুবকের ১০ বছর কারাদন্ড

বগুড়ার নন্দীগ্রামে সার ও কীটনাশকের দোকান পরিদর্শন করলেন উপ-পরিচালক

বগুড়ার ধুনটে পেঁপে চাষে লাখপতি আকুল

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে প্রাথমিকের তিন শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত