ঠাকুরগাঁও মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের জমি নির্ধারণে আটকে আছে ভবন নির্মাণ

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জমি নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতায় ঠাকুরগাঁওয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত ভবন নির্মাণ কাজ থমকে রয়েছে। এতে বিচারক, আইনজীবী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিশেষ করে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এজলাস সংকট, নথিপত্রের অব্যবস্থাপনা এবং মৌলিক সুবিধার অভাবে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
জেলা আইনজীবী সমিতি ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর নিজস্ব কোনো ভবন না থাকায় ঠাকুরগাঁও জেলা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভবনের নিচতলার কয়েকটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম চলছে।
এসব কক্ষে চিফ জুডিশিয়ালসহ মোট ৯টি আদালতে ৬ জন বিচারক বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিধি অনুযায়ী, ৯টি আদালতের জন্য ৯ জন বিচারক থাকার কথা থাকলেও এজলাস সংকটের কারণে শুধু ৬জন বিচারক দিয়ে চলছে কার্যক্রম।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির জাহেদুল ইসলাম বলেন, ৪ একর ১২ শতক জমি জেলা জজ আদালতের। তবে এসএ রেকর্ডে কিছু অংশ জেলা প্রশাসকের নামে চলে যায়। ২০০৫ সালে জেলা প্রশাসককে বিবাদী করে আদালতের পক্ষ থেকে দেওয়ানি মামলা করেন তৎকালীন নাজির। ২০২১ সালে জেলা জজ আদালতের পক্ষে রায় হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আপিল করলেও চার বছরেও শুনানি হয়নি। 'গণপূর্ত বিভাগের জেলা কার্যালয়।
ঠাকুরগাঁও সিজেএম আদালত ও জেলা প্রশাসনের সাথে জমি নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা, থমকে রয়েছে ভবন নির্মাণ কাজ। পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ নথি রাখা হয় এজলাসে, চুরি ও হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি। মৌলিক সুবিধার অভাবে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. জয়নাল আবেদীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আইনের বিধান হচ্ছে, জেলা ও দায়রা জজ সংবলিত বার ও বেঞ্চের যে জায়গা থাকবে, সেখানেই ভবন হবে। প্রশাসনের অযাচিত বক্তব্য হচ্ছে, এখানে জুডিশিয়াল ভবন হলে তাদের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনচিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের নাজির হামিদুল হক বলেন, ‘ভবন না থাকায় আমরা ২০ জন কর্মচারী একই রুমে গাদাগাদি করে বসতে বাধ্য হচ্ছি। এতে দাপ্তরিক কাজ করা খুবই কষ্টকর। 'এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, চিফ জুডিসিয়াল ভবন নিয়ে প্রশাসনের সাথে বিরোধ, এ কথাটা ঠিক নয়। জেলা প্রশাসক হিসেবে আমি এবং বিগত জেলা প্রশাসকেরা প্রত্যেকে চেয়েছেন সিজেএম কোর্ট হোক।
সমস্যা হচ্ছে স্থান নিয়ে। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে উচ্চপর্যায়ের লোকজন ও বিভিন্ন সরকারি প্রোগ্রামের জন্য ব্যাপক লোকসমাগম হয়। ১০ তলা ভবন হলে এই স্থানে চলাচলে অসুবিধা হবে, সম্ভবত এ কারণে পূর্ববর্তী জেলা প্রশাসকেরা আপত্তি করেছেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমরা জাজশিপের সাথে কয়েকবার মিটিংয়ে বসেছি। বিকল্প একটি জায়গার কথা ভাবছি এবং এ বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখব। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. জালাল উদ্দিন বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য সবার একমত হওয়া উচিত। এটি দ্রুত বিচার কার্যক্রমে সহায়ক হবে।
মন্তব্য করুন