পাথর লুটপাট: জড়িতদের তালিকাসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে পাথর লুটপাটের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সাত পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের তালিকাও যুক্ত করা হয়েছে। সেই তালিকায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম রয়েছে।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে এই প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসন সিংহ।
কমিটির প্রধান জানান, প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সেটা জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে বুধবার বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী জানিয়েছেন, পাথর লুটের ঘটনায় প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাথর লুটের সাথে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে প্রশাসন তালিকা প্রকাশ করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সরকারের সকল ইন্টেলিজেন্স এ ব্যাপারে কাজ করছে। সময় হলেই অপরাধীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
পাথর ও পর্যটন রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, পাথর রক্ষাসহ সীমান্ত এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সিলেট সেক্টরে নতুন একটি বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুনসম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র এলাকা থেকে পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। লুট হওয়া পাথর উদ্ধার অভিযান শুরু করে তারা। আলোচিত এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহকে প্রধান কমিটি তিন সদস্যের কমিটিতে রাখা হয় কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার ও সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম লিংকনকে। ১৭ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। তবে পরে আরও তিন দিন সময় বাড়ানো হয়।
এদিকে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় ৪২ জনকে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতারা রয়েছেন। কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান ও অনুসন্ধান চালিয়ে এদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।
সাদাপাথর চুরির ঘটনায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলার তথ্যও পেয়েছে দুদক।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভোলাগঞ্জ থেকে ১০ লাখ ঘনফুট পাথর চুরি হয়েছে। এর মধ্যে অতিমূল্যবান সাদাপাথর উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ ঘনফুট। গত এক বছরে সাদাসহ অন্যান্য পাথর চুরি হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ ঘনফুট। সাদাপাথর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে গত ১০ আগস্ট। এরপর দুদক ভোলাগঞ্জে অভিযান চালায় গত ১৩ আগস্ট।
মন্তব্য করুন