শিক্ষক আন্দোলন থেকে আটক হওয়া ২৮ জনের মুক্তি

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালে আটক হওয়া ২৮ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রায় সাত ঘণ্টা পর সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে উখিয়া থানা থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
থানায় পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান চৌধুরী, সদস্য সচিব সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা সংগঠক ওমর ফারুক, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর নুরুল হক, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইউসুফ নুরীসহ সর্বমোট ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
মুক্তির পর বিকেল ৫টার দিকে মুক্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক, সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল ও আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারে জড়ো হন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান চৌধুরী জানান, আগামী ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কক্সবাজার সফর উপলক্ষ্যে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, আজ স্থানীয়দের অধিকার আদায়ে উখিয়ায় সর্বদলীয় ঐক্য উদাহরণ তৈরি করেছে, এটাই আমাদের জুলাই স্পিরিট।
আন্দোলনে সংহতি জানানো ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের কক্সবাজারের ছাত্র প্রতিনিধি ও এনসিপি নেত্রী জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, মুক্তি পাওয়া আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির পাশাপাশি সৃষ্ট ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তও প্রয়োজন।
এর আগে বুধবার সকাল ৮টার দিকে আন্দোলন চলাকালে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে নারীসহ তিন শিক্ষক গুরুতর আহত হন এবং অন্তত সাতজনকে আটক করা হয়। সকাল ১১টার দিকে আহতদের দেখতে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।
আরও পড়ুনএ সময় এনসিপি নেত্রী জিনিয়া শারমিন রিয়া সহ অন্তত ২১ জনকে দ্বিতীয় দফায় আটক করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আটকের সময় জিনিয়াকে বলতে শোনা যায়, আমি অধিকারের জন্য কথা বলছি, আমি কি ছাত্রলীগ..?
আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে উখিয়া থানা ফটকের সামনে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক আন্দোলনকারী বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে আটকদের মুক্তি ও ওসির পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় থানায় প্রবেশের পথে প্রিজন ভ্যান আটকে দেওয়া হয়।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল থানায় প্রবেশ করে বৈঠক করেন। তবে বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা থানার ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ফের লাঠিচার্জ করে। এতে এনসিপির জেলা সংগঠক খালিদ বিন সাইদ ও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকরা শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে গত জুলাইয়ে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন