ভিডিও শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫

কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তানিশার উদ্যোক্তা হওয়া

কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তানিশার উদ্যোক্তা হওয়া

নিজের আলোয় ডেস্ক : নীলফামারীর কিশোরী তানিশা তানভী ঐশী। একাকিত্ব দূর করতে শুরু করে কংক্রিট দিয়ে শোপিসের কাজ। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সে সফল উদ্যোক্তা হয়েছে। 

তানিশার ছোটবেলা থেকেই হাতের কাজের প্রতি ভালোবাসা ছিল, কিন্তু তখনো ভাবেনি এটা একদিন তার পেশা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরে ধীরে কাজের চাহিদা বাড়ে, আর এখন এটা তার ছোট ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার পর ঢাকা থেকে গ্রামে চলে আসে ঐশী। তখনই তার এক বন্ধু একটা পেজ খুলে দেয় পণ্য বিক্রির জন্য। সেখান থেকেই তার যাত্রাটা শুরু হয়। তার ফেসবুক পেজে কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কংক্রিটের শোপিস ও হোম ডেকর প্রোডাক্ট সেল করা হয়। 


ঐশী মূলত হ্যান্ডমেড কনক্রিট প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে ডেকোর আইটেম, ক্যান্ডেল, ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড, প্ল্যান্টার, কোস্টার, নানা শেপড প্ল্যান্টার, প্ল্যান্টার শোপিস এবং ভাস। সব প্রোডাক্ট নিজের হাতে বানায় এবং প্রতিটি ডিজাইন ইউনিক ও কাস্টমাইজড করে। ঐশী সব সময় চেষ্টা করে যাতে ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী পণ্য ডিজাইন করতে পারে। মূলত হোম ডেকোরকে আর্টের রূপ দেওয়াই তার কাজের মূল উদ্দেশ্য। এ কাজ করার পেছনে তাকে সব সময় তার পরিবারের সদস্যরা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তার বোন বিদেশ থেকে সব কাঁচামাল জোগাড় করে দিয়েছে এবং তার বাবাও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাঁচামাল এনে দিতেন। তাদের বাসায় ছোটবেলা থেকেই একটা ক্রাফটের পরিবেশ ছিল। ঐশীর খালামনি ও নানি ক্রাফটের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেই পরিবেশেই বড় হওয়ার ফলে কাজটা তার জন্য সহজ হয়েছে। 


ঐশীর শুধু একা এ কাজ করে না, তার পরিবারের সদস্য ও দুজন ছোট হেল্পার তার ক্রাফটের কাজে সহায়তা করে। তাদের মধ্যে একজন নবম শ্রেণিতে পড়ে, আরেকজন পঞ্চম শ্রেণিতে। তারা দুজনেই ছোট ছোট কাজে তাকে সাহায্য করে। ঐশীর মা তাকে প্রতিটি ধাপে সাহায্য করেন যেমন- ডিজাইন, রং, কিংবা গুছিয়ে নেওয়া সবকিছুতেই তিনি পাশে থাকেন। তার ছোট ভাইও মাঝে মাঝে তাকে প্রোডাক্ট তৈরিতে সাহায্য করে। আর তার বাবা প্যাকেজিং করেন। তারা মূলত সবাই মিলে একটা ছোট টিম হয়ে গেছে যেখানে।

আরও পড়ুন


একজন তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে অনেক ধরনের বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে ঐশীকে। প্রথমে মানুষ খুব একটা গুরুত্ব দিত না ভাবত এটা শুধু টাইমপাস। কাঁচামাল জোগাড় করাও অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে, কারণ বেশির ভাগ জিনিস বাইরে থেকে আনতে হয়। তাই তাকে সবকিছু প্ল্যান করে করতে হতো। পড়াশোনা আর কাজ একসঙ্গে চালানোও মাঝে মাঝে কষ্টকর হয়ে যায়। তারপর হাতে তৈরি হওয়ায় প্রোডাক্ট বানাতে অনেক সময় লাগে, এসব মিলিয়ে পথটা সহজ ছিল না, কিন্তু ভালোবাসা আর মানসিক শক্তি দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে ঐশী।


৫০০ টাকা পুজি নিয়ে শুরু করলেও  বর্তমানে তিনি  মাসে প্রায় লাখ টাকা উপার্জন করেন। ঐশীর স্বপ্ন হচ্ছে তার এই ছোট্ট কাজটাকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া। ভবিষ্যতে একটা নিজস্ব স্টুডিও করতে চায়, যেখানে বড় পরিসরে সে প্রোডাকশন চালাবে। যার মাধ্যমে সে কিছু তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত করবে।


সে চায় তার প্রোডাক্ট দেশের বাইরেও পরিচিতি পাক, যাতে তার হাতের কাজ একদিন আন্তর্জাতিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে চায় ঐশী, কারণ জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা দুটোই তার স্বপ্ন পূরণের পথ খুলে দেবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় প্রধান শিক্ষকের রাজকীয় বিদায়

এবার ভুটানের লিগে খেলতে গেলেন আফঈদা ও স্বপ্না

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ১৪৫০ পিস ইয়াবা জব্দ, গ্রেফতার ৩

শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা নন: নাহিদ ইসলাম

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা