ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে নিঁখোজ মিলনের জন্য এখনো পথ চেয়ে আছেন তার মা 

জুলাই আন্দোলনে নিঁখোজ মিলনের জন্য এখনো পথ চেয়ে আছেন তার মা 

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: গত জুলাই আন্দোলনে মিছিলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন বগুড়া সারিয়াকান্দির জুলাই যোদ্ধা মনিরুজ্জামান মিলন। নিখোঁজ মিলনের মা এখনো ছেলের ছবি বুকে নিয়ে পথ চেয়ে থাকেন, ছেলে আসবে বলে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি না থাকায় নানা সমস্যায় ভুগছেন মিলনের স্ত্রী। ছোট সন্তান এখন প্রশ্ন করে বাবা কোথায়? বছর পেরিয়ে গেলেও মিলনের পরিবার পায়নি তেমন কোনও সরকারি সহায়তা। তবে তারেক রহমান প্রদত্ত এক লাখ টাকা পেয়েছেন। পেয়েছেন জামায়াতের সহায়তা।

জুলাই আন্দোলনে নিহত বগুড়া সারিয়াকান্দির মিলনের মা  মেরিনা বেগমের (৬৫) চোখের পানি গত একবছর ধরেই । ছেলে আসবে বলে, এখনো তিনি তার ছেলের জন্য পথ চেয়ে রয়েছেন। সারাদিনের বেশিরভাগ সময়ে তিনি কোরআন পরেন, নামাজ পরেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, ফিরে চান আন্দোলনে নিঁখোজ ছেলেকে।

মেরিনা বেগম কখনও মনে করেন, ছেলে হয়তো গুলির আঘাতে মারাই গেছে। কোথাও হয়তো তার লাশ গুম করা হয়েছে অথবা কোনও গণকবরে মাটি দেওয়া হয়েছে। ছেলেকে শেষ বিদায় জানানোরও ভাগ্যও তার হয়নি। এদিকে স্বামীকে হারিয়ে গত একবছরে পাগলপ্রায় হয়েছেন নিখোঁজ মিলনের স্ত্রী সবিতা বেগম। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তার দিনকাল খুবই কষ্টে অতিবাহিত হচ্ছে। বাড়ি থেকে দেয়া হয় বিয়ের চাপও। নিজে বিধবা না সধবা তা এখনো তিনি জানতে পারলেন না। তাদের একমাত্র মেয়ের বয়স এখন দুই বছরের কাছাকাছি। মুখে কথা ফুটেছে। গত ৫ আগস্ট সর্বশেষ সকাল ১১ টায় তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় মিলনের এবং সেখানে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার কথাও জানান তার স্বামী মিলন। এরপর আর তার সাথে কোনও যোগাযোগ হয়নি। ওইদিন বিকেলে সবিতা জানতে পারেন মিলনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

র্বশেষ গত ৫ আগস্ট যোহরের আযানের পর মিলনের সাথে কথা হয় তার মায়ের। মিলন মায়ের খাওয়ার খোঁজ নিয়ে মায়ের কাছে মিছিলে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু মেরিনা বেগম ছেলেকে মিছিলে যেতে বারণ করেছিলেন। সংবাদ পেয়ে গত ৬ আগস্ট মিলনের ভাই ঢাকায় যান নিখোঁজ ভাইয়ের খোঁজে। সেদিন সকালে কাভার্ডভ্যানে আশুলিয়া থানার সামনে ফুটওভার ব্রিজের নিচে তিনি ৬টি লাশ দেখতে পান। কিন্তু সেগুলোর মধ্যে তার ভাই ছিল না। এরপর সারাদিন তিনি আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন হাসপাতাল, থানা এবং ক্লিনিকে খোঁজ নিয়েও মিলনের দেখা পাননি।

আরও পড়ুন

পরের দিন ৭ আগস্ট ঢামেকে ২৬টি, পিজিতে দু’টি, সোহরাওয়ার্দীতে চারটিসহ বেশকিছু এলাকায় অনেক লাশ দেখেও মিলনের খোঁজ পাননি। পরের দিন চীন মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকাসহ বেশকিছু হাসপাতালে অনেক লাশ দেখেও তার ভাইয়ের খোঁজ না পেয়ে তিনি নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। পরে সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৮ আগস্ট তিনি ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে ১৯টি লাশের মধ্যেও তার ভাইয়ের লাশ খুঁজে পাননি। মিলনের সন্ধানে আশুলিয়া থানায় মিসিং ডায়েরি করা হলেও প্রশাসন কোনও তথ্য দিতে পারেনি। নিখোঁজ মনিরুজ্জামান মিলন ঢাকা ইপিজেডের ফোর ইয়াং ডায়িং নামের একটি পোশাক শিল্পের মেকানিক বিভাগে সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, মিলন ঢাকা জেলার সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে মিছিলে গিয়ে গত ৫ আগস্ট নিখোঁজ হন।

 

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৮ জুলাই জবিতে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী

গোপালগঞ্জে হামলাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম এনসিপির

বগুড়ায় বউ-শাশুড়ীকে জবাই করে খুন

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

‘চুপিচুপি’ উইনার্স মেডেল পকেটে ঢুকিয়ে ভাইরাল ট্রাম্প

দেশে ফিরেই কয়েক ঘন্টা বিশ্রাম শেষে স্টেজ শো’তে লিজা