পুশইন করতে হলে শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্টের দোসরদের পাঠান: জুলাই পদযাত্রায় নাহিদ ইসলাম

পঞ্চগড় ও নীলফামারী প্রতিনিধি : জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই পঞ্চগড় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী দ্বারা মানুষজনকে হত্যা করা হয়। গত ৫০ বছরে এই সীমান্ত হত্যা কোন সরকার বন্ধ করতে পারেনি। আমরা দেখেছি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে পুশইন করা হচ্ছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই। এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়; ছাত্র জনতার বাংলাদেশ। যদি পাঠাতে হয় তাহলে শেখ হাসিনাকে পাঠান। ফ্যাসিস্টের দোসরদের পাঠান। আমরা জুলাই অভ্যুত্থানের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবো।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরেবাংলা পার্ক সংলগ্ন চৌরঙ্গী মোড়ে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন এনসিপি’র মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসানাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমরা আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই আমরা বলেছি নতুন সংবিধান এবং জুলাই গণঅভ্যূত্থানের ডিক্লেয়ার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের মধ্যদিয়ে আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিশ্চিত করব। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন, আমাদের সমর্থন দিন। ইনশাআল্লাহ আপনারা আমরা একসাথে যে স্বাধীনতা এনেছি সেই স্বাধীনতা রক্ষা করব। পঞ্চগড়ের মাটিতে আবারও দেখা হবে। আগামী ৩ আগস্ট ঢাকার শহীদ মিনারে আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে যাচ্ছি। সারা বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার ইশতেহার পাঠ হবে ইনশাআল্লাহ।
এর আগে বিকেলে পঞ্চগড় জেলা জজ কোর্টের সামনে থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়ে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক দিয়ে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এসে শেষ হয়। এনসিপির নেতাকর্মীরা ছাড়াও হাজারও ছাত্র-জনতা পদযাত্রায় অংশ নেন।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির দেশ গঠনে জুলাই পদযাত্রার তৃতীয় দিনে সৈয়দপুর ও নীলফামারীতে ব্যাপক সাড়ার মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুনএর আগে সৈয়দপুরের বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর আটকে পড়া পাকিস্তানি ক্যাম্প পদির্শন করেন এবং তাদের সমস্যার কথা শোনেন নেতারা।
নীলফামারী চৌরঙ্গী মোড়ের পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এখনও অনলাইনে সরব। তারা ঘাপটি মেরে দেশেই রয়েছে। একারণে আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। গত বুধবারও এনসিপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তাদের ধরে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ পরাজিত শক্তি নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এমন অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কে দেবে। সরকারও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সংবিধান বদলাতে হবে। কারণ বর্তমান সংবিধান আওয়ামী সংবিধান। এটার পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ নির্মূল হবে না। ফ্যাসিস্ট বিদায় হলেও ফ্যাসিবাদী তন্ত্র এখনও জেঁকে বসে আছে রাষ্ট্রযন্ত্রে।
একই পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘দেশে আমরা আর চাঁদাবাজি দেখতে চাই না, দখলদারিত্ব দেখতে চাই না। কোনো লুটপাট দেখতে চাই না।
এনসিপি নীলফামারী জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন, দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মুনিয়া শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব তাসনিম জারা, নাহিদ সারোয়ার নিভা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কারী আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিউনসহ নীলফামারী জেলা ও ছয় উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন