দিনাজপুরে লিচুর মৌসুমে দেড় লাখ নারী ও কিশোরের কর্মসংস্থান

দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি : লিচুখ্যাত দিনাজপুর জেলায় লিচুর মৌসুমে কর্মসংস্থান হয় প্রায় দেড়লাখ নারী ও কিশোরের। প্রায় পৌনে দুই মাসব্যাপী তারা এ কাজের সুযোগ পায়। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত লিচু বাগানে কাজ করে তারা। এতে যে মজুরি পায় তা দিয়ে সংসারের বাড়তি খরচ মেটানোর পাশাপাশি টাকা সঞ্চয় করে অনেকে।
দিনাজপুরে মধ্য মে থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গাছ থেকে লিচু নামানো ও বেচাকেনা করা হয়। দিনাজপুর সদর, বিরল উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাগানে লিচু নামানো, গণনা ও খাচা বা টুকরিতে রাখার কাজ করে বিভিন্ন বয়সী এসব নারী ও কিশোররা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ জেলার মাটি ও জলবায়ু লিচু উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় এখানে লিচু চাষে রীতিমত বিপ্লব ঘটেছে। জেলায় এবার সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে।
সরেজমিন সদর উপজেলার মাশিমপুর, মহব্বতপুর ও আউলিয়াপুর, বিরল উপজেলার মাধববাটি গ্রামের বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার বিভিন্ন বাগানে গাছ থেকে লিচু নামানোর কাজ করছে একদল কিশোর। আর গাছের নিচেই গোল হয়ে বসে লিচু বাছাই, গণনা ও খাচা বা টুকরি বাঁধার কাজ করছেন নারীরা। একেকটি বাগানে ৩০-৪০ জন নারী কাজ করছেন।
আরও পড়ুনমহব্বতপুর গ্রামের একটি লিচু বাগানে কাজ করতে আসা আছিয়া খাতুন, খাদিজা বেগম, হাসিনা, রোকসানা, শিল্পিসহ কয়েকজন নারী জানান, এ কাজ তারা প্রতিবছর করেন। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পান তারা।
এতে এই অল্পসময়ে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় হয় তাদের। যা দিয়ে তারা সংসারের বাড়তি চাহিদা মেটান। এছাড়াও সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় ঝরে পড়া লিচুগুলো বাগানিরা তাদের দিয়ে দেন। যা পরিবারের জন্য নিয়ে যান অনেকেই, কেউ কেউ আবার বিক্রিও করেন।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান জানান, কাজ পরিচ্ছন্ন হওয়ায় বাগানি ও ব্যবসায়ীরা নারী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাতে বেশি আগ্রহী হন। তবে লিচু বাগানে কত নারী শ্রমিক কাজ করেন এর কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে বা অন্য কোনো দপ্তরে পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন