ধূমপান ছেড়ে টাকা জমিয়ে হাঁসের খামার করে ভাগ্য বদলেছেন আসলাম

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : হাঁস পালন করে আসলাম হোসেন নামে এক যুবক স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের বিয়ালা গ্রামের ৩৮ বছর বয়সী আসলাম ৪০টি হাঁস দিয়ে খামার শুরু করে এখন প্রায় ২ হাজার হাঁসের মালিক হয়েছেন।
জানা যায়, আসলাম হোসেন অতিরিক্ত সিগারেট পান করতেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে ধূমপান থেকে বিরত থেকে এক মাসের জমানো টাকায় ৪০ টি হাঁস দিয়ে খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ১৮’শ হাঁস রয়েছে।
২০১৯ সালে আসলাম একদিন দুপুরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিলেন। তখন যোহরের নামাজের আজান শুনে আসলাম সিগারেট ফেলে নামাজ আদায় করতে মসজিদে যান। শরীর থেকে সিগারেটের গন্ধ পেয়ে পাশের এক মুসল্লি তার কাছ থেকে সড়ে দাঁড়ান। লজ্জায় বিব্রত হয়ে প্রতিজ্ঞা করেন জীবনে আর কোনো দিন ধূমপান করবেন না। সিগারেট ছেড়ে দিয়ে একটি টিনের কৌটায় প্রতিদিন এক’শ করে টাকা জমাতে থাকেন। এক মাসে কৌটা থেকে পান তিন হাজার টাকা।
এক সাথে এত টাকা তিনি কখনও জমাতে পারেননি। টাকাগুলো দিয়ে কি করবেন ভাবতে থাকেন আসলাম। জমানো টাকায় স্থানীয় মোসলেমগঞ্জ হাট থেকে ৪০ টি হাঁসের বাচ্চা কেনেন। বড় করে সেগুলো বিক্রি করেন আবার ছোট ছোট হাঁসের বাচ্চা কিনে লালনপালন করেন। এভাবেই তার খামারে প্রতিবছর হাঁসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী, তার খামারের হাঁসের দাম প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা। মাত্র ৪০টি হাঁস তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে। ছেলেমেয়েরাও পড়াশোনা করছে। তার খামারে ২ জন নারী শ্রমিক কাজ করছেন।
আরও পড়ুনআসলাম বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শে বিদেশি খাকি ক্যামবেল জাতের হাঁস লালন পালন করেন। এই হাঁসগুলো তিন মাসেই পূর্ণ বয়স হয়। রোগবালাই কম এবং জলবায়ুসহিষ্ণু। পূর্ণবয়স্ক একটি হাঁসের ওজন এক থেকে দেড় কেজি হয়। প্রতিটি হাঁস বিক্রি করে আয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। হাঁস পালন করে এখন সংসার ভালই চলছে।
আসলামের বাবা আজমল হোসেন জানান, এক সময় অভাবের তাড়নায় সংসার চালাতে পারতেন না। অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। সবসময় হতাশায় ভুগতেন। আজ তার ছেলের জন্য সংসারে অনেক উন্নতি হয়েছে। কর্মচারীও রেখেছেন।
মন্তব্য করুন