পাবনার বেড়ার পোর্টে ঈদের রেশ কাটেনি চারদিন পরও মানুষের ঢল

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উৎসব। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা শুধু ধর্মীয় আবেগেই নয়, সামাজিক মিলনমেলাও বটে। আর এই আনন্দ-উৎসব নতুন মাত্রা পায় যখন তা প্রকৃতির মাঝে, নৈসর্গিক পরিবেশে উদযাপিত হয়। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে হাজারও মানুষের ঢল নেমেছে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার হুরাসাগরপারের পোর্ট এলাকায়।
ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এবং প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজে নিতেই প্রতিদিন পোর্ট এলাকায় ভিড় করছে হাজার মানুষ।
ঈদ বা পূজা এলেই বেড়া পৌর এলাকার হুরাসাগরপারের পোর্ট এলাকায় বেড়ানোর জন্য এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে জড়ো হয় হাজারও মানুষ। তবে এখন আর ঈদ বা পূজাতেই মানুষ এখানে ঘুরতে আসে তেমনটি নয়। প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পরিবার পরিজন সাথে নিয়ে একটু বিনোদনের জন্য এ পোর্ট এলাকায় ঘুরতে আসেন।
তবে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবারে এ পোর্ট এলাকায় মানুষের ভিড় অনেকটাই বেশিই হয়ে থাকে। বর্তমানে হুরাসাগর নদের জল বেড়ে যাওয়ায় পোর্ট এলাকাজুড়ে বর্ষার আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। ঈদে পোর্টে ঘুরতে আসা অনেকেই ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে হুরাসাগর নদে ভেসে বেড়ানোর আনন্দ উপভোগ করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসী জানায়, বেড়া নৌবন্দর পুনরুজ্জীবিত প্রকল্পের আওতায় ২০০৬ সালে পাউবো বেড়া পৌর এলাকার ডাকবাংলোর পাশে বিশাল নৌঘাট নির্মাণ করে। নানা জটিলতার মুখে এক পর্যায়ে পাউবো নৌবন্দর পুনরুজ্জীবিত প্রকল্পটি বাতিল করে। ফলে বাঁধানো ঘাটের অংশটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই ভাবেই পড়ে থাকে এবং এর নাম হয় ‘পোর্ট’। ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এক পর্যায়ে স্থানটি ভ্রমণের আদর্শ জায়গা হিসেবে গড়ে ওঠে।
আরও পড়ুনসরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হুরাসাগরপারের পোর্ট এলাকায় ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পোর্ট এলাকার মাঝখানে রাস্তা আর দু’ধারে বসেছে খাবার ও বাচ্চাদের জন্য নানা ধরনের খেলনার দোকান। তাতে এই স্থান সংলগ্ন সড়কে যানজট সৃষ্টি হলেও সেটাকে আমলে না নিয়েই মানুষজন চলাচল করছেন। এই স্থানের বিস্তৃত বাঁধানো ঘাট ও সড়কের ওপর মেলার মতো পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
বেড়া পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্র দিয়ে বয়ে যাওয়া হুরাসাগর নদের তীরে অবস্থিত ‘পোর্ট’ নামটি স্থানীয়দের মুখে মুখে ফিরলেও বাস্তবে এটি এক অনন্য পর্যটন সম্ভাবনাময় স্থান। এখানকার খোলা আকাশ, নদীর বুকে সূর্যাস্ত, পাখির কলকাকলি ও বাতাসে ঢেউ খেলা জল হাজারও মানুষের বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে।
বেড়া পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফিরোজুল আলম বলেন, জনগণের এই উপস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে আমরা পোর্ট এলাকাকে একটি টেকসই ও সুপরিকল্পিত পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এতে সকলের সহযোগিতা ও সচেতনতাই পারে এই জায়গাটিকে আরও আকর্ষণীয় ও পরিচ্ছন্ন করে তুলতে। আমরা ইতোমধ্যে পোর্ট এলাকার উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। শিগগিরই এখানে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
মন্তব্য করুন